ফুলে ফুলে প্রথম সাজবে চকরিয়ার ১৩৯ শহীদ মিনার

স্বাধীনতার ৫২ বছর পর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :
১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার উপকূলীয় জনপদের বদরখালী হাবিবা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্বাধীনতার ৫২ বছর পর প্রত্যাশার অবসান ঘটেছে ২০২০ সালে।
যার পূর্ণতা পেয়েছে একটি শহীদ মিনার নির্মাণের মাধ্যমে। গ্রামীণ জনপদে শিশুশিক্ষায় ভূমিকা রাখতে স্বাধীনতার এক বছর আগে এটি প্রতিষ্ঠিত হলেও এতদিন এখানে ছিল না স্থায়ী কোনো শহীদ মিনার। এই প্রাপ্তি অপূর্ণ থাকায় বছরের বছরের পর কোমলমতি শিক্ষার্থীরা মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা দিবস কিংবা বিজয় দিবস এমনি পাঠ্যপুস্তক থেকে বায়ান্নের ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে জানলেও ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েই শুধুই অপেক্ষার প্রহর গুনেছেন। অথচ কোমলমতি শিক্ষার্থীরা দেশ মাতৃকার টানে বিশেষ দিবসগুলোতে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে বরাবরে ব্যাকুল থাকতো।
হাবিবা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিরাজুল করিম বলেন, এক বছর আগেও আমার বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা প্রায় তিন কিলোমিটার মেঠোপথ পাড়ি দিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে অবস্থিত শহীদ মিনারে গিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে। জানা গেছে, বদরখালী হাবিবা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো একইসঙ্গে চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার এলাকায় অবস্থিত ১৪৪ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে অন্তত ১৩৯ টি বিদ্যালয়ে নির্মিত হয়েছে স্বাধীনতার অন্যতম স্মৃতিফলক নতুন শহীদ মিনার। চকরিয়া উপজেলার বর্তমান শিক্ষা কর্মকর্তা অঞ্জন চক্রবর্তী বলেছেন, করোনা পরিস্থিতিতে বিদ্যালয়সমূহ বন্ধ থাকলেও বিদ্যালয়ের আশপাশের শিক্ষার্থীরা নবনির্মিত শহীদ মিনারে প্রথমবারের মতো ভাষা দিবসে শ্রদ্ধা জানাবে। পূর্ববড় ভেওলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিলসাদ আঞ্জুমান রুমা বলেন, আমাদের বিদ্যালয়টি উপজেলা সদর থেকে অন্তত ১৫ কিলোমিটার দূরে অজ পাড়া গাঁ এলাকায় অবস্থিত। চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ সামসুল তাবরিজ বলেন, উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকায় মোট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ১৪৪টি। তারমধ্যে ১৩৯টি বিদ্যালয়ে স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। মূলত নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধকরণ, মহান মুক্তিযুদ্ধ, মাতৃভাষার প্রতি গভীর মমত্ববোধ সৃষ্টি ও ৫২ এর ভাষা আন্দোলনের সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে জানানোর জন্য প্রতিটি সরকারি বিদ্যালয়েই শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়েছে।