ফার্মেসিতে এবার ডেক্সামেথাসনের খোঁজ করছে অনেকে

‘চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া সেবনে মৃত্যুঝুঁকি’ #
নিজস্ব প্রতিবেদক :
যুক্তরাজ্যের একদল গবেষক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সংকটাপন্ন রোগীদের চিকিৎসায় জীবনরক্ষাকারী ওষুধ হিসেবে ডেক্সামেথাসনকে চিহ্নিত করছেন। সম্প্রতি এই তথ্য প্রকাশের পর নগরীতে হিড়িক পড়েছে ওষুধটি কেনার। ইতোমধ্যে ভিড় বেড়েছে ফার্মেসিতে।
এর আগে ডেলটা কোম্পানির স্কাভো-৬ ও বেক্সিমকোর ইভেরা-৬ ও ইভেরা-১২ কেনার হিড়িক পড়েছিল। চাহিদার সাথে তৈরি সৃষ্টি হয়েছিল মারাত্মক সংকটের এবং দাম বেড়েছিল কয়েকগুণ।
এদিকে, ডেক্সামেথাসেন ওষুধ ব্যবহারে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। তারা বলছেন এই ওষুধের রয়েছে মারাত্মক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। সবাই যেন এই ওষুধ কেনার উপর ঝুঁকে না পড়েন।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান স্বাক্ষরিত গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ডেক্সামেথাসন সেবন করলে মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যেমন উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হাড়ক্ষয়, আলসার, অতিরিক্ত ওজনবৃদ্ধিসহ রোগীর মৃত্যুঝুঁকি রয়েছে।
ফার্মেসি ঘুরে জানা গেছে, ডেক্সামেথাসন ওষধুটি দামে সস্তা এবং সহজলভ্য। একবক্স ওষুধ ৫০০ ট্যাবলেট এর (৫০ পাতা) দাম ৫৭০ টাকা। প্রতিপাতা ১০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে খুচরা ফার্মেসিগুলোতে। এছাড়া ইনজেকশনের দাম খুচরা প্রতিটি ২৮ টাকা। এক বক্সের দাম (১০টি) ২৯০ টাকা।
ওষুধ বিক্রেতারা বলছেন, এরই মধ্যে বেড়ে গেছে এই ওষুধের চাহিদা। তবে দাম এখনও বাড়েনি। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। তবে মার্কেটে কিছুটা সংকট তৈরি হচ্ছে। অর্ডার করলেও মিলছে না।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ পূর্ব গেইটের সিটি মেডিক্যাল হলের মালিক মিশু সেন বলেন, ‘ওষুধটির নাম প্রচার হওয়ার দিন থেকে অনেকে এসে খোঁজ করেছেন। আবার অনেক আত্মীয়স্বজন ফোন করে আছে কিনা জানতে চেয়েছেন এবং অগ্রিম অর্ডার দিতে চেয়েছেন। এখন প্রতিদিনই ওষুধটির খোঁজে আসছে কেউ না কেউ।’ তবে প্রেসক্রিপশন ছাড়া কাউকে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে না বলে তিনি জানান।
সেন্ট্রাল প্লাজার মেডিসিন শপের কর্মচারী বাপ্পা দাশ বলেন ‘ওষুধটির চাহিদার সাথে সংকট তৈরি হচ্ছে। গত দু’দিন আগে একটি কোম্পানিকে অর্ডার দিলেও তারা এখন ওষুধটি সরবরাহ করতে পারেনি।’ অনেক ক্রেতাই প্রেসক্রিপশন ছাড়া সাদা কাগজে লিখে আনছেন বলে তিনি জানান।
করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবায় দিশেহারা পুরো বিশ্ব। একটি ওষুধ বা টিকার জন্য সবাই চেয়ে আছেন বিশেষজ্ঞদের দিকে। এই রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কখনও নাম এসেছে ফেভিপিরাভিরের। আবার কখনও এসেছে হাইড্রোক্সক্লোরোকুইনের বা আইভার ম্যাকটিনের নাম। কিন্তু কোন ওষুধই পুরোপুরি কার্যকরী এমন প্রমাণিত হয়নি। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থাও কোন ওষুধের নাম সুপারিশ করেনি।
প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ বিক্রি লক্ষ্য করা হচ্ছে জানিয়ে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর চট্টগ্রাম এর সহকারী পরিচালক হোসাইন মোহাম্মদ ইমরান সুপ্রভাতকে বলেন, ‘ফার্মেসিগুলোকে প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ বিক্রয় না করতে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং একটি গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। এরপরও যদি কেউ নির্দেশনার অমান্য করে তাদের লাইসেন্স বাতিলসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ ক্রয় ও সেবন থেকে বিরত থাকতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।