প্রত্যেক ধর্মেরই মূলধারা মনুষ্যত্ব অর্জন : মেয়র

চসিকের বাণী অর্চনা মণ্ডপে সম্মাননা প্রদান ও বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠান
‘সকল পশু জন্মগতভাবেই পশুত্বই তার স্বকীয় বৈশিষ্ট্য। কিন্তু মানুষ হয়ে জন্মালে সকলেই মনুষ্যত্ব বোধে বৈশিষ্ট্য মণ্ডিত হতে পারে না। এর জন্য প্রয়োজন উদার নৈতিক ধর্মীয় অনুশাসন, মানবিক গুণাবলী অর্জন, জ্ঞান আহরণ এবং নীতি-নৈতিকতায় শুদ্ধাচারী জীবন ধারণ। এটা প্রত্যেক ধর্মেরই চেতনাগত মূলধারা।’
গতকাল বিকেলে কুসুমকুমারী সিটি করপোরেশন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে চসিক পূজা উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে বাণী অর্চনা মণ্ডপে সম্মাননা প্রদান ও বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ রেজাউল করিম চৌধুরী একথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের মোট জনগোষ্ঠীর মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন ধর্মাবলম্বী আছেন। এখানে কেউ সংখ্যাগুরু বা সংখ্যালঘু নন। আমাদের জাতিগত পরিচয় আমরা বাঙালি। একাত্তর সালে বাঙালি হিসেবে সকল ধর্মাবলম্বী অস্ত্র হাতে এক সাথে যুদ্ধ করেছি এবং সকলের ত্যাগ ও সম্মিলিত রক্ত স্রোতধারায় স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। তাই এদেশ চেতনাগতভাবেই অসাম্প্রদায়িক এবং মানুষের পাঁচটি মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয়টি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের জন্য সমতার ভিত্তিতেই প্রযোজ্য।
তিনি চট্টগ্রামের ইতিহাস-ঐতিহ্য-ধর্ম-সংস্কৃতি-রাজনীতি এবং ভূ-প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের কথা উল্লেখ করে বলেন, পীর-আউলিয়া, সাধক, মনীষী ও বিপ্লবীদের এই পুণ্য ভূমিতে সকল ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় পীঠ স্থান রয়েছে। এগুলোতে সকল ধর্মাবলম্বী এবাদত আরাধনা প্রার্থনার জন্য অন্তর থেকে নিবেদিত হতে পারেন। একই সাথে এই নগরীর বর্ণিল সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রয়েছে। এই চট্টগ্রামে জন্ম গ্রহণ করেছেন ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের বিপ্লবী এবং রাজনীতিক। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার বার্তাটি বঙ্গবন্ধু চট্টগ্রামে জহুর আহমদ চৌধুরীর কাছেই পাঠিয়েছিলেন। তাই চট্টগ্রাম ধর্ম-ইতিহাস-ঐতিহ্য-সংস্কৃতি-রাজনীতির সৃষ্টিশীল উর্বর মৃত্তিকা। আর এই নগরী পাহাড়-সমুদ্র-নদী-সমতল ভূমির অপূর্ব বৈচিত্র্যে ভরপুর নান্দনিক উপাদানে সমৃদ্ধ জনপদ। আমি নগরবাসীকে আবেদন জানাই, এই নগরীকে অত্যাধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানে উন্নীতকরণে দল-মত-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সহযোগিতা করুন।
পূজা উদযপান পরিষদের সভাপতি প্রকৌশলী ঝুলন কুমার দাশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন আন্দরকিল্লা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জহর লাল হাজারি, জামাল খান ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন, সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নিলু নাগ, রুমকি সেনগুপ্ত, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাসেম, আওয়ামী লীগ নেতা হাসান মাহামুদ চৌধুরী শমসের, অতিরিক্ত প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোর্শেদুল আলম চৌধুরী, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুদীপ বসাক, আশুতোষ দে, রতন কুমার চৌধুরী, উৎপল সেন, সমীর কর, রতন ভট্টাচার্য্য, প্রদীপ দে, টবলু দাশ, লিটন দাশ, চসিক কুসুম কুমারী বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা চম্পা মজুমদার, সিবিএ’র সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আহমেদ, মুজিবুর রহমান, জাহেদুল ইসলাম, আবুল মাসুদ প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি