নগরীতে মানববন্ধন : সকল সহিংসতার দ্রুত বিচার দাবি

শিশু ও নারীদের উপর ধর্ষণসহ সহিংসতা বন্ধে ও সকল নির্যাতনের দ্রত বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে উন্নয়ন সংগঠন ইপসা।
গতকাল বুধবার সকাল ১১ টায় বিশ^ শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে সরকারি নিদের্শনা মোতাবেক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব চত্বরে এই মানববন্ধন কর্মসূচি আয়োজন করা হয়।
চট্টগ্রামের বিশটিরও অধিক উন্নয়ন সংস্থা ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে অংশ নেয়।
মানববন্ধনে স্বাগত বক্তব্যে ইপসার কর্মসূচি সমন্বয়ক মোহাম্মদ আলী শাহিন বলেন, নারীর নিরাপত্তা দেওয়া এবং নারী নির্যাতন, ধর্ষণ প্রভৃতি অপরাধ প্রতিহত করার দায়িত্ব শুধু সরকার ও সরকারি দলের নয়। সমাজের সকল শ্রেণিপেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধভাবে শিশু ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে। ইপসার প্রধান নির্বাহী মো. আরিফুর রহমান বলেন, বিগত কয়েকমাস ধরে দেশে শিশু ও নারী নির্যাতন অস্বাভাবিক মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে। ধর্ষণ, শিশু ও নারী নির্যাতনসহ সকল ধরনের সহিংসতার দ্রুত বিচার করতে হবে এবং সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। উন্নয়নকর্মী থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষকে ধর্ষণ ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে সচেতন হতে হবে একইসাথে অন্যদেরও সচেতন করতে হবে। রাষ্ট্রের প্রতিটি মানুষের সচেতনতাই পারে আমাদের এই বিপর্যয় থেকে রক্ষা করতে। সন্তানকে বাসায় নৈতিকতা ও সুশিক্ষা এবং নারীর প্রতি শ্রদ্ধাশীলতার শিক্ষা দিতে হবে। পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও নারীর প্রতি সম্মানের মানসিকতা সৃষ্ঠির জন্য প্রতিনিয়ত নৈতিক শিক্ষা দিতে হবে।
শিশু ও নারী নির্যাতন বন্ধে মানববন্ধনে চারটি সুনির্দিষ্ট দাবি জানায় ইপসার উপ পরিচালক নাছিস বানু।
ইপসার প্রোগ্রাম অফিসার মো. ওমর শাহেদ হিরোর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিউজের) সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস, ১৫ নম্বর বাগমনিরাম ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো. গিয়াস উদ্দিন, এন্টি ট্যোবেকো মিডিয়া এলায়েন্সের (আত্মা) আহ্বায়ক মো. আলমগীর সবুজ, আত্মার সদস্য কামরুল হুদা, ইপসার উপ পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান, ব্রাইট বাংলাদেশ ফোরামের নির্বাহী পরিচালক উৎপল বড়–য়া, সপ্নীল ব্রাইট বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আলী, সুইট বাংলাদেশের সভাপতি নির্বাহী পরিচালক মোছা. জেবুন্নেছা, চট্টগ্রাম জিপির মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা কানিজ ফাতিমা, কাজীর দেউরি ব্যবসায়িক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কমিউনিটি ভলান্টিয়ার মোহাম্মদ মাসুদ, প্রগতিশীল যুব সংঘেল সভাপতি মো. হেফাজুর রশিদ, উষার আলো যুব সংঘের সভাপতি স্বর্ণা আক্তার, ইয়োথ ভয়েস অব চট্টগ্রামের সভাপতি রিফাত জাহান নদী, শতদল যুব সংঘের সভাপতি বৈশাখী আক্তার সুমি, সপ্ন ও আগামীর সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন, জাগ্রত তরুণ সংঘের সভাপতি হুমায়ুন কবির প্রমুখ।
সভায় বক্তারা মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে শিশু ও নারী নির্যাতন বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্র ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট
‘মানবতা যখন আক্রান্ত, তখন নীরবতা অপরাধ। বর্তমান বাস্তবতার যে চিত্র বিশেষ করে নারী শিশুদের উপর মধ্যযুগীয় বর্বরতা, ধর্ষণ, এসব ঘটনায় আমরা যদি নিশ্চুপ থাকি তাহলে দূর ভবিষ্যতে মানুষ হয়ে বেঁচে থাকার ন্যুনতম অধিকারটুকুও হারিয়ে ফেলবো। ধর্ষণের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।”
অব্যাহত ধর্ষণ, নারী লাঞ্চনার বিরূদ্ধে বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্র ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা এ আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্র জেলা আহ্বায়ক আসমা আক্তারের সভাপতিত্বে গতকাল নগরীর নিউ মার্কেট চত্বরে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম নগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দীপা মজুমদার, আসমা আক্তার, গৃহকর্মী অধিকার রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আনজু আরা বেগম, ছাত্র ফ্রন্ট নেতা রিপা মজুমদার।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিউ মার্কেট মোড় থেকে শুরু হয়ে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চত্বরে শেষ হয়।
বৃহত্তর চট্টগ্রাম অধিকার আন্দোলন
দেশব্যাপী হঠাৎ ধর্ষণ বেড়ে যাওয়ার প্রতিবাদে এবং প্রতিকারের দাবিতে বৃহত্তর চট্টগ্রাম অধিকার আন্দোলনের উদ্যোগে বুধবার এক মানববন্ধন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব চত্বরে অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ধর্ষণের এ ধারাবাহিকতা চলতে থাকলে সকল ভালো অর্জনগুলো ধূলিসাৎ হয়ে যাবে। মানববন্ধনে বক্তারা আরো বলেন, সিলেট এম.সি কলেজ ও নোয়াখালীর ঘটনায় বুঝা যায় দেশে ধর্ষণ কোন পর্যায়ে রয়েছে। তারা ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতারকৃতদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিশেষ ক্ষমতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের আহ্বান জানান। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বৃহত্তর চট্টগ্রাম অধিকার আন্দোলনের সভাপতি অধ্যক্ষ মুকতাদের আজাদ খান, সহ-সভাপতি কাজী জিয়া উদ্দিন সোহেল ও এমদাদুল করিম সৈকত, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক কামাল হোসেন, প্রচার সম্পাদক আতাউল হাকিম, সহ-প্রচার সম্পাদক প্রলয় দাশ, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক সজল দাশ, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক জিয়াউল করিম রিজভী, রাউজান প্রতিনিধি সি.আর বিধান বড়–য়া প্রমুখ।
প্রতিধ্বনি ক্লাব
দেশব্যাপী ধর্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবিতে প্রতিধ্বনি ক্লাবের আলোক প্রজ্বলন করা হয়।
সংগঠনের সভপতি সমন্যু চক্রবর্তী আকাশের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রিমন দত্তের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মহানগর ছাত্রলীগ নেতা অনিন্দ্য দেব।
এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ফরহাদ আহমেদ রুবেল, জয় দাশ গুপ্ত, ডা. সৌরভ দাশ, শুভ দাশ, রুবেল মুহুরী, তন্ময় দাশ গুপ্ত, সানি তালুকদার, ছোটন দাশ, সন্জয় দে, আসিফুর রহমান আরজু, তাওহীদ, প্রান্ত, জয়, বিস্ময় প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি