দু’সপ্তাহ ধরে খালের আবর্জনা রাস্তায়!

কেবি আমানী আলী রোডে খালের ময়লা-আবর্জনা তুলে রাখা হয়েছে রাস্তার উপর-সুপ্রভাত

রুমন ভট্টাচার্য :
জলাবদ্ধতা নিরসনে নগরীতে চলছে খাল পরিষ্কারের কাজ। কিন্তু খালের ময়লা-আবর্জনা তুলে স্তুপ করে রাখা হচ্ছে চলাচলের রাস্তার উপর। গত দু’সপ্তাহ আগে তুলে রাখা খালের আবর্জনায় সয়লাব নগরীর ১৭ নম্বর পশ্চিম বাকলিয়া কে বি আমান আলী রোড। ফলে চলাচলে বেড়েছে দুর্ভোগ। দুর্গন্ধে ভারী হয়ে উঠেছে আশপাশের পরিবেশ। এতে ক্ষোভ জানিয়েছে এলাকার মানুষ।
সরেজমিন শুক্রবার (১৯ জুন) সকালে দেখা গেছে, রাস্তার একপাশজুড়ে আবর্জনার স্তূপ। বের হচ্ছে উৎকট দুর্গন্ধ। দুর্গন্ধ নিয়ে চলছে পথচারী। পাশে বসেই শাক-সবজি, ফলমূল বিক্রিতে ব্যস্ত কিছু বিক্রেতা। রাস্তাটির কিছু অংশ উঁচু করে দেওয়া হয়েছে ইট ও বালুর প্রলেপ। গত দু’দিনের বৃষ্টির কারণে সেখানে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় গর্তের। সেই গর্তে জমে রয়েছে পানি। ফলে গাড়ি চলাচলে পেতে হচ্ছে বেগ। বিশেষ করে রিকশাচালকদের কষ্টের যেন সীমা নেই।
এলাকাবাসী ও পাশ্ববর্তী দোকানদাররা জানান, ‘খাল থেকে ময়লা তুলে রাখা হয়েছে প্রায় ১৫ দিন। কিন্তু এসব নেওয়ার খবর নেই। ঠিকাদারের গাফিলতি কারণে দিনের পর দিন এগুলো পড়ে আছে। নেওয়ার কোনো খবর নেই।’
এলাকার বাসিন্দা সোলায়মান সওদাগর বলেন, ‘দু’সপ্তাহের বেশি সময় ধরে রাখা আবর্জনার দুর্গন্ধে আশপাশের পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। ঘরে-বাইরে সবখানেই দুর্গন্ধ। গত দু’দিনের বৃষ্টিতে কিছু আবর্জনা রাস্তায় ছড়িয়ে পড়েছে। করোনার এমন কঠিন সময়ে যেখানে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতায় জোর দেওয়া হচ্ছে সেখানে দিনের পর দিন আবর্জনা পড়ে আছে খোলা আকাশের নিচে। দেখার যেন কেউ নেই।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাউন্সিলর এ কে এম আরিফুল ইসলাম ডিউক বলেন, ‘কাজটি আমাদের নয়, কাজ করছে সিডিএ ও সেনাবাহিনী। তবুও খালের কাজ শুরু হয়েছে সেটা আমাকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু খালের আবর্জনারগুলো তো সাথে সাথে ডাম্পিং করার কথা। এভাবে ফেলে রাখলে মানুষের দুর্ভোগ তো বাড়বেই। রাস্তাটিতে উন্নয়ন কাজ চলছে হয়ত এ কারণে একটু এদিক-সেদিক হতে পারে।’ তিনি আবর্জনা সরিয়ে বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্তদের সাথে কথা বলবেন বলে জানান।
রিকশা চালক সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘রাস্তায় বালু ও গর্তে পানি জমে থাকার কারণে রিকশা চালাতে খুবই কষ্ট হচ্ছে। রাতের বেলায় অনেক সময় দুর্ঘটনাও ঘটছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে কাউন্সিলর এ কে এম আরিফুল ইসলাম ডিউক বলেন, ‘উন্নয়নকাজ চলাকালীন বর্ষা চলে আসায় একটু সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। না হয় রাস্তাটির ঢালাইকাজও সম্পন্ন হয়ে যেত। আশাকরি দ্রুত হয়ে যাবে।’
সবজি বিক্রেতা প্রদীপ দাশ বলেন, ‘আবর্জনার দুর্গন্ধে বসা যাচ্ছে না। দু’সপ্তাহ ধরে ক্রেতারা কেউ আসছে না। বেচাবিক্রি একেবারেই কমে গেছে।’
এসব বিষয়ে জানতে জলাবদ্ধতার মেগা প্রকল্পে সেনাবাহিনীর প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল মোহাম্মদ শাহ আলীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সুপ্রভাতকে বলেন, ‘আমি ঠিকাদারকে বলে দিচ্ছি এগুলো যাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরিয়ে নেওয়া হয়। হয় কি কাজ যখন নিয়মিত থাকে তখন প্রতিদিনই মাটি তোলে পরের দিন নেয়। রাস্তায় কালকে যে মাটি তোলা হয়েছে এবং ১৫ দিন আগে যে মাটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে তারমধ্যে কোনো পার্থক্য থাকে না। সে কারণে এলাকার মানুষ এগুলো বেশিদিন ধরে দেখে। তবে আমাদের ঠিকাদারদেরও কিছুটা অবহেলা আছে এসব সরানো ব্যাপারে। আবার মাঝখানে একটানা বৃষ্টি ছিল সেকারণেও সরাতে পারেনি।’