দীঘিনালা উপজেলা হাসপাতাল ২৪ কোটি টাকার কাজে ব্যাপক অনিয়ম

রাতের আঁধারে ঢালাইয়ের কাজ চলছে

রাতের আঁধারে ঢালাইয়ের কাজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, খাগড়াছড়ি :

খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় ৫০ শয্যার উপজেলা হাসপাতাল নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নিয়ম বহিভূর্তভাবে রাতের আঁধারে ঢালাইয়ের কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক কনসট্রাকশন। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জনতিনিধি ও স্থানীয় বাসিন্দারা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে রাতের বেলায় হাসপাতালের ঢালাইয়ের কাজ না করার জন্য বলা হলেও তা মানা হচ্ছে না।

সরেজমিনে গত শনিবার রাতেও হাসপাতালে ঢালাইয়ের কাজ করতে দেখা গেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের। এ সময় হাসপাতালের মূলভবনের কলাম ঢালাই করছিল তারা। এ সময় স্থানীয়রা ঢালাই কাজে বাধা দেন।

নির্মাণকাজে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের একজন তত্ত্বাবধায়ক উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও এ সময় কেউ উপস্থিত ছিল না। এ সুযোগে সরকারি অর্থে নির্মিত হাসপাতালের  নির্মাণকাজে ব্যাপক অনিয়ম করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

স্থানীয় বাসিন্দা জীবন চৌধুরী উজ্জ্বল জানান, রাতের বেলায় ঢালাই করার কোনো নিয়ম নাই। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোনো নিয়মের তোয়াক্কা করছে না। শুরু থেকেই হাসপাতাল নির্মাণে অনিয়ম করছে তারা। নির্মাণকাজের অনিয়ম নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীকে জানানো হয়েছে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক কনসট্রাকশন-এর সহযোগী এমডি নোমান রাতের বেলায় কাজ করার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, কিছু ঢালাই বাকি ছিল। তাই রাতের বেলায় নির্মাণ কাজ করছি। রাতের বেলায় ঢালাইয়ের কাজ করার নিয়ম রয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি  কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

দীঘিনালা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোস্তাফা কামাল মিন্টু অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালের মতো জনগুরুত্বপূর্ণ ভবন নির্মাণে অনিয়ম করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক কনসট্রাকশন। কাজে অনিয়মের কারণে আমি তিনবার বাধা দিয়েছি। বেইজ নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে তিন নাম্বার ইট। কাজের সময় একজন প্রকৌশলী উপস্থিত থাকার থাকলেও বেশির ভাগ সময় তাদের কেই উপস্থিত থাকে না। এই সুযোগে ঠিকাদারের লোকজন রাতের বেলায় বেইজ ঢালাই করেছে। এছাড়া নির্মাণ কাজে যে অনুপাতে সিলেকশন বালু ব্যবহার করার কথা, তাও করা হচ্ছে না।

স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী টুটুল চাকমা জানান, এর আগেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে রাতের বেলায় কাজ না করার জন্য বলা হয়েছে। কয়েকদিন ধরে আমি অসুস্থ, তাই সাইটে যেতে পারিনি। রাতের বেলায় কাজ বন্ধ রাখতে ঠিকাদারকে অফিসিয়ালি নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এর ব্যত্যয় ঘটলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।