তিন বছরে কোনো অগ্রগতি চোখে পড়েনি

চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পণ্য পরিবহনে সবার শীর্ষে রয়েছে পোশাক শিল্পের কারখানাগুলো। চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ বা কনটেইনার জটের কারণে নির্ধারিত সময়ে আমদানি পণ্য না পেয়ে এবং রপ্তানিপণ্য জাহাজিকরণ করতে না পারার ঘটনা পোশাক শিল্পে অনেক রয়েছে। তাই বে টার্মিনাল বাস্তবায়ন হলে পোশাক শিল্পের মালিকরা অনেক ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাবে। প্রত্যাশিত বে টার্মিনাল নিয়ে সুপ্রভাতের সঙ্গে কথা হয় পোশাক শিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র প্রথম সহ-সভাপতি এম এ ছালামের।

সুপ্রভাত বাংলাদেশচট্টগ্রাম বন্দরের বর্তমান প্রবৃদ্ধির জন্য বে টার্মিনালের প্রয়োজন কতটা?

এম ছালাম: চলতি বছর ছাড়া প্রতিবছর চট্টগ্রাম বন্দরের প্রবৃদ্ধি ১৫% এর বেশি থাকে। তাই অবশ্যই চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য বে টার্মিনাল প্রয়োজন। আর প্রয়োজন দেখেই ২০১০ সালে তা আলোচনার আসার পর প্রকল্পটি নেয়া হয়েছিল।

সুপ্রভাত: কিন্তু ২০১০ সালে তা আলোচনায় আসার পর এখন পর্যন্ত তেমন অগ্রগতি নেই কেন?

এম ছালাম: প্রকৃতপক্ষে গত দুই থেকে তিন বছর ধরে কয়েকটি সাইনবোর্ড ছাড়া অন্য কোনো অগ্রগতি চোখে পড়েনি। সরকার অনেকগুলো উন্নয়ন প্রকল্প নিচ্ছে এবং তা বাস্তবায়নও করছে। কিন্তু বে টার্মিনালে কেন অগ্রগতি নেই তা বোধগম্য হচ্ছে না।

সুপ্রভাতবে টার্মিনালের অর্থনৈতিক গুরুত্ব কেমন দেখছেন?

এম ছালাম: বে টার্মিনালের পাশেই রয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ে এবং রেললাইন নেটওয়ার্ক। এর মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে পণ্য পরিবহন সহজতর হবে। ফলে বন্দরকিন্দ্রিক যানবাহনগুলো শহরের ভেতরে প্রবেশ করবে না, যানজটমুক্ত থাকবে নগরী।

অপরদিকে এই রোড নেটওয়ার্কের কারণে বে টার্মিনাল থেকে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যসমূহে সহজে পণ্য পরিবহন করা যাবে। ইতিমধ্যে খাগড়াছড়ির রামগড় দিয়ে ভারতের ত্রিপুরার সাবরুমে যাতায়াতের সড়ক হচ্ছে। এছাড়া মিরসরাই ইকোনমিক জোনে অনেক বড় বড় শিল্প কারখানা হবে। সেসব কারখানায় পণ্য পরিবহনে বে টার্মিনালের সাথে যোগাযোগ সহজ হবে। অপরদিকে ভারতের সাথে বর্তমানে যে শিপমেন্ট শুরু হচ্ছে তাতে বে টার্মিনাল সবচেয়ে বেশি সাপোর্ট দিতে পারবে। তাই চট্টগ্রাম বন্দরের প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে বে টার্মিনালের বিকল্প নেই।

সুপ্রভাত : কিন্তু আগামীতে মাতারবাড়ি বন্দর হচ্ছে রয়েছে পায়রা মোংলা বন্দর সেসব বন্দর দিয়েও তো দেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখা সম্ভব

এম ছালাম: মোটেও না। বিশ্বে চট্টগ্রাম বন্দরের একটি পরিচিতি রয়েছে। সেই পরিচিতির কারণে এবং ভৌগোলিক অবস্থানগত বিবেচনায় চট্টগ্রাম বন্দর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে রয়েছে। তাই চট্টগ্রাম বন্দরকে বাদ দিয়ে কোনো পরিকল্পনা করা যাবে না। অন্যান্য বন্দর চট্টগ্রাম বন্দরের পর্যায়ে আসতে আরো অনেক বছর সময় লাগবে। কর্ণফুলীর তলদেশে টানেল চালু হলে বাঁশখালী পর্যন্ত শিল্প কারখানা গড়ে উঠবে। উপকূলীয় এলাকায় এসব কারখানার আমদানি পণ্য ও রপ্তানি পণ্য সরবরাহে বে টার্মিনাল ছাড়া উপায় নেই।

সুপ্রভাত: বে টার্মিনাল হলে পোশাক শিল্প কী সুবিধা পেতে পারে?

এম ছালাম: বে টার্মিনাল চালু হলে দেশে পোশাক শিল্পের মালিকরা আরো বেশি বেশি অর্ডার পাবে। কারণ এতে বিদেশি ক্রেতাদের অফার করতে সহজ হবে। পণ্য আমদানি-রপ্তানি সহজতর ও দ্রুততর হবে। যা পণ্যের অর্ডার পেতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।