টিকাদানে অব্যবস্থাপনা

মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব
সংকীর্ণ জায়গা, অপর্যাপ্ত বুথ
অনেকে টিকা না নিয়েই ফিরেছেন

রুমন ভট্টাচার্য <<<<
নগরে করোনা টিকাদান কার্যক্রমে দেখা দিয়েছে অব্যবস্থাপনা। টিকা নিতে আসা অনেকেরই অভিযোগ বুথে ও বাইরে কোথাও সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না। নেই কোনো সিরিয়াল। একজনের গা ঘেঁষে দাঁড়াচ্ছে অন্যজন। টিকাদানের বুথ ও পর্যবেক্ষণ বুথগুলোর জায়গাগুলো একেবারে সংকীর্ণ। অব্যবস্থাপনার কারণে অনেকে টিকা না নিয়েই ফিরে যাচ্ছেন।
গতকাল সকাল সরেজমিন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল ও চসিক জেনারেল হাসপাতাল ঘুরে মিলেছে এমন তথ্য ও চিত্র।
ভুক্তভোগীরা বলেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হলে বুথ সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি সিরিয়াল অনুযায়ী টিকা প্রদানের ব্যবস্থা করা জরুরি। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছেন তারা চেষ্টা করছেন।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) টিকা নিতে আসা স্থপতি জেরিনা হোসেন সুপ্রভাতকে বলেন, ‘অব্যবস্থাপনার কারণে আমি টিকা না নিয়েই বাসায় ফিরে এসেছি। কোনো সিরিয়াল নেই, সামাজিক দূরত্ব নেই। মানুষের ব্যাপক ভিড়। একজনের গা ঘেঁষে অন্যজন দাঁড়াচ্ছে। অথচ করোনা মহামারিতে শুরু থেকেই বলা হচ্ছিল সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে। এসব স্থানে তো আরো বেশি সচেতন হওয়ার প্রয়োজন ছিল।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আফতাবুল ইসলাম সুপ্রভাতকে বলেন, টিকা গ্রহণে আগ্রহীদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ায় চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। অতিরিক্ত মানুষের চাপে সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করা যাচ্ছে না। তবে আমরা চেষ্টা করছি।’
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে আসা একজন ষাটোর্ধ্ব পুরুষ বলেন, ‘দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। নেই কোনো সিরিয়াল। কার আগে কে ঢুকবে এমন এক অবস্থা। এছাড়া অনেক বয়স্ক নারী-পুরুষ আছেন, যাদের দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা সম্ভব নয়। তাদের জন্য আলাদা বুথের প্রয়োজন ছিল।’
সিটি করপোরেশন জেনারেল হাসপাতালে টিকা নেওয়া মিঠু শীল বলেন, ‘টিকা নেওয়ার পর তেমন কোনো অসুবিধা মনে হয়নি। টিকা নিতে আসা মানুষের ভিড় ভালোই ছিল। তবে ব্যবস্থাপনা আরো ভালো হতে পারত। সামাজিক দূরত্ব একেবারেই নেই বললেই চলে। টিকাদানের জায়গাও প্রশস্থ নয়। বুথের সংখ্যা আরো বাড়ানো প্রয়োজন।’
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সেলিম আকতার চৌধুরী বলেন, ‘বর্তমানে সিটি করপোরেশন জেনারেল হাসপাতালে বুথ সংখ্যা ১০। আজও টিকাকেন্দ্রে ভিড় ছিল। মানুষের চাপ বাড়ার কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা যাচ্ছে না। বুথ সংখ্যা আরো বাড়ানোর চিন্তা রয়েছে। আজ নগরে মোট ৫৩৭৮ জন টিকা নিয়েছেন।’
উল্লেখ্য, নগরীতে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (চমেক) ও চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল, চসিক জেনারেল হাসপাতাল, সিটি করপোরেশন ছাফা মোতালেব মাতৃসদন হাসপাতাল, চসিক মোস্তফা হাকিম মাতৃসদন হাসপাতাল, চসিক বন্দরটিলা মাতৃসদন হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম পুলিশ হাসপাতাল কেন্দ্রে টিকা কার্যক্রম চলছে।