চলে গেলেন বিশ্বের প্রবীণতম ক্রিকেটার বসন্ত রাইজি

সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক :
চলে গেলেন দেশের প্রবীণতম প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটার বসন্ত রাইজি। শনিবার গভীর রাতে ১০০ বছরের এই ক্রিকেটার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। সংবাদসংস্থা পিটিআইকে ক্রিকেটারের জামাই সুদর্শন নানাবতী জানান, ‘বার্ধক্যজনিত রোগে দক্ষিণ মুম্বইয়ের ওয়াকেশ্বর এ নিজের বাসভবনে ঘুমের মধ্যেই ভোরবেলা আড়াইটার সময় মারা গিয়েছেন।’
পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, শনিবার বিকেলে চন্দনওয়ারি শ্মশানে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
১৯৪০ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ারও আগে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে প্রথমবার আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। ৯টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলে ২৭৭ রান করেছিলেন। ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ স্কোর ৬৮। রঞ্জিতে অবশ্য খেলেছেন আরো আগে। রঞ্জিতে অভিষেক ঘটে ক্রিকেট ক্লাব অফ ইন্ডিয়ার জার্সিতে। ১৯৩৯ সালে নাগপুরে বেরার ও সেন্ট্রাল প্রভিন্স এর বিরুদ্ধে যে দল খেলে। ১৯৪১ সালে বিজয় মার্চেন্টের অধীনে মুম্বই যেবার ওয়েস্টার্ন ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে খেলে সেবারেই বসন্ত রাইজি মুম্বইয়ের হয়ে অভিষেক করেন।
খেলার পাশাপাশি তিনি পেশায় একজন চার্টার্ড একাউন্টেন্ট এবং ক্রিকেটের ইতিহাসবিদও ছিলেন। মুম্বাইয়ের জিমখানার মাঠে যেবার ভারত প্রথমবার আন্তর্জাতিক টেস্ট ম্যাচ খেলে, তখন বসন্ত রাইজির বয়স মাত্র ১৩ বছর। চলতি বছরের জানুয়ারিতেই তিনি শতবর্ষ এ পদার্পণ করেছিলেন। সেই সময় শচীন টেন্ডুলকার এবং স্টিভ ওয়াহ ব্যক্তিগত উদ্যোগে তার বাড়ি গিয়েছিলেন।
ক্রিকেট লিখিয়ে মকরন্দ ওয়েঙ্গকর নিজের বই ‘বোম্বে বয়েস’ এ লিখেছেন, আট দশক ধরে ক্রিকেটকে প্রত্যক্ষ করেছেন বসন্ত। ওর মত ক্রিকেট জ্ঞান খুব লোকেরই রয়েছে। তবে ওর সবথেকে ভালো বিষয় হল, কখনো কোনো ক্রিকেটারকে অন্যের সঙ্গে তুলনা করে না।
ক্রিকেট ইতিহাস নিয়ে আটটা বই লিখেছেন বসন্ত রাইজি। সেই বইগুলো কতটা মূল্যবান তা জানাতে গিয়ে মকরন্দ ওয়েঙ্গকর বলেছেন, ‘দেশের ক্রিকেট চর্চার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্সি, ট্রায়ানগুলার, কোয়াদ্রাঙ্গুলার এবং পেন্টানগুলার ম্যাচ গুলোর অবদান ভবিষৎ এর কোনো ইতিহাসবিদ অস্বীকার করতে পারবেন না।’ এই টুর্নামেন্ট এরই বিশদ বিবরণ পাওয়া যায় বসন্ত রাইজির বইয়ের সৌজন্যে।
তার আরো সংযোজন, ‘রাইজি এবং ডন ব্র্যাডম্যান ক্রিকেট ইস্যুতে একে অন্যের পরিপূরক বলা যেতে পারে। যে ব্র্যাডম্যান একলা থাকতে পছন্দ করতেন তিনিও রাইজিকে মনের কথা খুলে বলতেন। সিকে নাইড়ু ছিলেন রাইজির প্রিয় ক্রিকেটার। একটি বই লিখেছিলেন তিনি যার নাম- সিকে নাইড়ু, দ্য শাহেনশা অফ ইন্ডিয়ান ক্রিকেট।’
খবর : ইন্ডিয়ানএক্সপ্রেস’র।