চট্টগ্রামে কারফিউ জারির আহ্বান ডা. শাহাদাতের

চট্টগ্রামসহ সারাদেশে করোনা আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ও মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন।
আজ ২৯ মে (শুক্রবার) এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ভয়ঙ্কর করোনা ভাইরাস সারাদেশে মহামারী আকার ধারণ করেছে। চট্টগ্রামে দিন দিন করোনা সংক্রমিত রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। বর্তমানে চট্টগ্রামের চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পড়েছে। করোনা রোগীর জন্য হাসপাতালে পর্যাপ্ত আইসিইউ, অক্সিজেন, সিলিন্ডার ও বেডের ব্যবস্থা নেই। স্বাস্থ্যখাতে সরকারের অব্যবস্থাপনার কারণে করোনা রোগীরা চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। হাসপাতালে গিয়ে করোনা রোগীরা ভর্তি হতে পারছে না। চিকিৎসার অভাবে মানুষ মারা যাচ্ছে। মানুষের মধ্যে এখন মৃত্যু আতঙ্ক বিরাজ করছে।
তিনি বলেন, বিগত ২৫ মে থেকে ৪ দিনে চট্টগ্রামে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৬৮৮ জন। মোট আক্রান্ত হয়েছে ২৪২৯ জন মানুষ। এরমধ্যে চট্টগ্রাম শহরেরই আক্রান্ত হয়েছে ৮০ শতাংশ লোক। অপরদিকে চট্টগ্রামের করোনা হাসপাতালে বেড আছে মাত্র ৩১০টি। এ অবস্থায় চিকিৎসা সুবিধা না বাড়িয়ে ৩১ মে থেকে লকডাউন খুলে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত হবে আত্মঘাতী। এতে চট্টগ্রামের মানুষ সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যঝুঁকির সম্মুখীন হবে। লকডাউন খুলে দিলে চট্টগ্রাম মৃত্যুপূরীতে পরিণত হবে।
তিনি বলেন, সরকারি ও বেসরকারি ডাক্তার এবং মেডিক্যাল স্টাফদের সুবিধাদির মধ্যে চরম বৈষম্যের কারণে বেসরকারি ডাক্তার ও স্টাফরা সর্বাত্মকভাবে ঝুকি নিয়ে কাজ করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। এই বৈষম্য দুর না করলে চট্টগ্রামে চিকিৎসাসেবা আরো কঠিন হয়ে যাবে। এমনিতে পুরো দেশ এখন করোনার ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। করোনা পরীক্ষায় ২২ শতাংশ রোগী শনাক্ত হচ্ছে। দেশে সর্বোচ্চ সংক্রমণের এই সময়ে সবকিছু খুলে দেয়া কতটা যুক্তিযুক্ত?
তিনি বলেন, করোনা রোগীদের সেবা দিতে সরকার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বলে মৃত্যু ও সংক্রমণ ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনার আগাম সংবাদ পাবার পরও তারা কোন ধরণের প্রস্তুতি নিতে পারেনি। পোশাক কারখানা ও দোকানপাট খোলার বিষয়ে শীথিলতা আসার পর থেকেই চট্টগ্রামে সামাজিক দূরত্ব ভেঙ্গে পড়ে। এতে চট্টগ্রামে পর্যায়ক্রমে বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যুর হার। ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের পর চট্টগ্রাম এখন হট স্পটে পরিণত হয়েছে। চট্টগ্রাম যদি মৃত্যুপূরীতে পরিণত হয় তাহলে দেশের অর্থনীতি বিকল হয়ে যাবে। তাই এই মুহূর্তে জরুরি ভিত্তিতে চট্টগ্রামে প্রচুর ফিল্ড হাসপাতাল ও আইসোলেশন হাসপাতাল তৈরি করতে হবে।
তিনি বলেন, করোনা দুর্যোগের সবচেয়ে গুরুতর সময়ে এসে সরকার লকডাউন খুলে গণহারে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের পথ খুলে দিচ্ছে। ভয়ানক এই সিদ্ধান্তের পরিণতির জন্য আওয়ামী লীগ সরকারই দায়ী থাকতে হবে। বিনা ভোটে সরকার গঠন করার কারণে আওয়ামী লীগ জনগণের কাছে কোনো জবাবদিহিতা নেই, যার কারণে লকডাউন তুলে দিয়ে দেশকে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
তিনি চট্টগ্রামের গুরুত্ব বিবেচনা করে করোনা রোগীর পরীক্ষা ও চিকিৎসা সেবা বৃদ্ধি করে লকডাউন না খুলে চট্টগ্রামে কারফিউ জারি করার আহবান জানান।