খাদ্যাভাবে প্রতিদিন মারা যেতে পারে ১২ হাজার মানুষ

পেরুতে গৃহহীন লোকেরা খাবারের আশায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে

সুপ্রভাত ডেস্ক :

অনেক বিশেষজ্ঞই পূর্বাভাস দিয়ে বলেছেন, কভিড-১৯ মহামারীর কারণে আগামী কয়েকটি বছর ভয়াবহ অর্থ ও খাদ্য সংকটে পড়বে বিশ্ব। এবার চ্যারিটি গ্রুপ অক্সফাম সতর্ক করে দিয়ে বলল, কভিড-১৯ মহামারীতে সৃষ্ট খাদ্যাভাবের কারণে ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুর চেয়েও বেশি মানুষ মারা যেতে পারে।

অক্সফামের পূর্বাভাস, চলতি বছর শেষ হওয়ার পর প্রতিদিন ক্ষুধার কারণে মারা যেতে পারে ১২ হাজার মানুষ। তারা বলছে, এ বছর আরো ১২২ মিলিয়ন মানুষ অনাহারে ভোগার তালিকায় যুক্ত হতে পারে।

‘দ্য হাঙ্গার ভাইরাস’ শিরোনামের প্রতিবেদনে দাতব্য প্রতিষ্ঠানটি বলছে-মহামারীর কারণে সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিপর্যয় ঘটবে এবং এ কারণেই তীব্র খাদ্য সংকট তৈরি হবে। তারা বলছে, বিশাল বেকারত্ব, লকডাউনের কারণে খাদ্য উৎপাদন ও বন্টন এবং সাহায্য বিতরণের সমস্যার মতো বেশ কিছু কারণে ক্ষুধা বেড়ে যাবে।

অক্সফাম জিবির প্রধান নির্বাহী ড্যানি শ্রিসকানদারাজাহ বলেন, ‘কভিড-১৯ এর প্রভাব ভাইরাসটির চেয়েও ব্যাপকভিত্তিক হবে, যা বিশ্বের মিলিয়ন মিলিয়ন দরিদ্র মানুষকে গভীর ক্ষুধা ও দারিদ্যের মধ্যে ঠেলে দেবে। সরকারের জন্য প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের বিস্তার থামানো ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ, পাশাপাশি এর কারণে ক্ষুধায় বহু মানুষের মৃত্যু হতে পারে, তাও থামাতে হবে। জাতিসংঘের সাহায্য তহবিলে সাহায্য করার মাধ্যমে সরকারগুলো অনেক মানুষের জীবন বাঁচাতে পারে এবং যুদ্ধ ও হানাহানি বন্ধ করে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে মহামারী মোকাবেলা করতে হবে।’

গ্রুপটি চায় আগামী সপ্তাহের জি২০ বৈঠকে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে অর্থসাহায্য করার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করুক যুক্তরাজ্য এবং ঋণ প্রকল্প বাতিল হোক।

ক্ষুধাপীড়িত ১০টি হটস্পট চিহ্নিত করছেন তারা: ইয়েমেন, ডিআর কঙ্গো, আফগানিস্তান, ভেনেজুয়েলা, ওয়েস্ট আফ্রিকান সাহেল, ইথিওপিয়া, সাউথ সুদান, সিরিয়া, সুদান ও হাইতি। এছাড়া ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলের মতো উন্নয়নশীল দেশ ক্ষুধার কেন্দ্রস্থলে পরিণত হতে পারে বলে তাদের ধারণা। কেননা মহামারী ও লকডাউনের কারণে এসব দেশে লাখ লাখ মধ্যম আয়ের মানুষের আয় কমতে কমতে তারা অবশেষে ভয়ংকর খাদ্য সংকটে পড়তে পারে।

ভারতের ব্যাপারে বলা হয়, ‘ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কারণে ভরা মৌসুমে কাজে যোগ দিতে পারছেন না মাইগ্র্যান্ট শ্রমিকরা। এ কারণে শ্রমিকের ফসল জমিতেই থাকছে ও নষ্ট হচ্ছে। ফসলের ভরা মৌসুমে ব্যবসায়ীরা আদিবাসী সম্প্রদায়ের কাছে যেতে পারছে না ও তাদের ফসল কিনতে পারছে না, এতে ১০০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ আয়বঞ্চিত হচ্ছে।’

খাদ্য তৈরি ও সরবরাহের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজে ভূমিকা রাখে নারী। এছাড়া তারা নানাবিধ গৃহস্থালির কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকে। এ খাতটিও মুখ থুবড়ে পড়ে আছে।

অক্সফাম জানায়, মহামারী শুরুর পর ৩৪৪টি সহযোগীকে নিয়ে ৬২টি দেশের ৪৫ লাখ ক্ষুধাপীড়িত বিপদগ্রস্ত মানুষকে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করেছে তারা। আরো ১১৩ মিলিয়ন ডলার তহবিল সংগ্রহ করে তারা আরো ১৪ মিলিয়ন মানুষকে সাহায্য করতে চায়।