কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দু’গ্রুপে সংঘর্ষ

নিজস্ব প্রতিনিধি, উখিয়া »

উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্প কুতুপালংয়ে গত ৪/৫ দিন ধরে দফায় দফায় সংঘর্ষ, অপহরণ, বাড়ি ও দোকান ভাংচুর, লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। রেজিষ্ট্রার্ড ক্যাম্পের এক রোহিঙ্গাকে অপহরণের জের ধরে এ পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ করতে ক্যাম্প ইনচার্জ, ক্যাম্প পুলিশ ঘটনাস্থল ফুটবল খেলার মাঠ সংলগ্ন আনরেজিষ্ট্রার্ড রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন করে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানা গেলেও ক্যাম্প ইনচার্জ বলছেন, এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি। তবে দু’জন রোহিঙ্গার মধ্যে কথা কাটাকাটির জের ধরে পরিবেশ একটু উত্তপ্ত হয়ে উঠলেও তা নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। রেজিষ্ট্রার্ড রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চেয়ারম্যান হাফেজ জালাল আহমদ জানান, রেজিষ্ট্রার্ড ক্যাম্পের সদ্য জেল ফেরত আবুল কালাম নামের এক রোহিঙ্গাকে আলেকিন নামধারী কতিপয় সন্ত্রাসী ২৬ আগস্ট অপহরণ করে নিয়ে গেলে ঘটনার সূত্রপাত হয়। এ  নিয়ে নতুন পুরাতন রোহিঙ্গা দু’গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে ২৭ ও ২৮ আগস্টের বিভিন্ন সময়ে আরো ১১ জন রোহিঙ্গাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। তৎমধ্যে মো. রফিক (৪০), আবু তৈয়ব (৩৫), আবুল কালাম (৪০), আব্দু শুক্কুর (২৫) ও নবী হোছন (১৯) মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে আসতে সক্ষম হলেও ৭ জন রোহিঙ্গা যথাক্রমে এজাহার হোসেন (৩৫), মৌলভী জিয়াউর রহমান (৩৪), আমিন উল্লাহ (২৭), রহমত উল্লাহ (২২), জসিম উদ্দিন (১৯), শামশুল আলম (২৮), আব্দুল আমিন (২৫)কে তারা এখনো মুক্তিপন দাবি করে জিম্মি অবস্থায় রেখে দেয়। এদের উদ্ধারের জন্য তাদের পরিবার পরিজন ও গ্রামবাসী চেষ্টা চালালে প্রতিপক্ষ তাদের উপর হামলা চালিয়ে আহমদ হোছন, মোহাম্মদ ফয়সাল, মোহাম্মদ আয়ুব, আম্বিয়া খাতুন ও শফি উল্লাহসহ ৫ জন আহত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় আহমদ হোছনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে,মোহাম্মদ ফয়সালকে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, মোহাম্মদ আয়ুবসহ অপরাপর ৩ জনকে স্থানীয় এমএসএফ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাফেজ জালাল আরো জানান, এসময় প্রতিপক্ষ রোহিঙ্গারা প্রায় ২৫টি বসতবাড়ি ও ২৬টি দোকান ভাংচুর ও লুটপাট করে। তিনি বলেন, জেল ফেরত আবুল কালাম ইতিপূর্বে আলেকিনের সদস্য হিসেবে কাজ করেছে। সে বর্তমানে আলেকিন গ্রুপ ত্যাগ করে চলে আসায় ক্ষিপ্ত হয়ে সন্ত্রাসীরা তাকে অপহরণ করে। প্রতিপক্ষ হেড মাঝি জকরিয়া জানান,  রেজিষ্ট্রার্ড ক্যাম্পের রোহিঙ্গা ও তাদের নেতা হাফেজ জালাল আহমদের সাথে একাধিকবার বৈঠক হয়েছে উভয় গ্রুপ শান্তিপূর্ণ বসবাস করার নিমিত্তে। কিন্তু তারা তা উপেক্ষা করে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে আনরেজিষ্ট্রার্ড রোহিঙ্গাদের উপর হামলা চালিয়ে বেপরোয়া মারধর ও ভাংচুর চালায়। যার ফলে আনরেজিষ্ট্রার্ড ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা  ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়।

এব্যাপারে ক্যাম্প ইনচার্জ মো. খলিলুর রহমান খানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি। তবে কতিপয় রোহিঙ্গাদের মধ্যে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে বাকবিতন্ডা হলেও তা নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।