কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়কে যাত্রীদুর্ভোগ

♦ বিরতিহীন বাস চলে লোকালের নিয়মে
♦ সিএনজি’তে দ্বিগুণ ভাড়া আদায়ের অভিযোগ

শান্তি রঞ্জন চাকমা, রাঙ্গুনিয়া »
দীর্ঘ এক যুগ ধরে কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়কে লোকাল বাস সংকট চলছে। এ সড়কে প্রতিদিন রাঙ্গুনিয়া-কাপ্তাই উপজেলাসহ তিন পার্বত্য জেলার হাজার হাজার যাত্রী যাতায়াত করে থাকে। লোকাল বাস সংকটে সাধারণ যাত্রীদের দ্বিগুন ভাড়া পরিশোধসহ নানাভাবে হয়রানি ও চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। যাত্রী কম হওয়ার অজুহাত দেখিয়ে বাস মালিক পক্ষ প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় ধরে এই সড়কে লোকাল বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়। ফলে কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়কে স্বল্প ও কম আয়ের পেশাজীবীরাই বেশি বেকায়দায় পড়েছে বলে জানা গেছে। বিশেষ করে স্কুল-কলেজগামী ছাত্রছাত্রী এবং চট্টগ্রাম শহরে কর্মরত হাজার হাজার গার্মেন্টস কর্মী। রাঙ্গুনিয়া ও কাপ্তাই থেকে শহরে একবার যাতায়াতে গুণতে হয় অতিরিক্ত ভাড়া। চাকরিজীবি বাস যাত্রী মোহাম্মদ করিম জানান, ১-৫ কিলোমিটার পথ যাতায়াতে লোকাল বাসের ভাড়ার তিনগুন বেশি ভাড়া গুনতে হয় সিএনজি বা অন্য গাড়িতে যেতে। লোকাল বাস চলাচল না করায় এক শ্রেণির সিএনজি চালিত অটোরিক্সার ড্রাইভার দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছে। সূত্র জানায়, ১৯৬২ সালে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে বাসে যাত্রী পরিবহন শুরু হয়। লিচুবাগান থেকে চট্টগ্রাম শহরে যাতায়াত করে। যাত্রীদের কথা বিবেচনা করে ১৯৮৮ সালে কাপ্তাই সড়কে বিরতিহীন সার্ভিস চালু করা হয়। পাশাপাশি লোকাল বাস চলাচল অব্যাহত ছিল। সিএনজি অটোরি´া ও বিভিন্ন গ্যাসচালিত গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়াতে লোকাল বাসের কদর কমতে থাকে। যাত্রী কম হওয়ার অভিযোগ এনে সড়কে লোকাল বাস চলাচল বন্ধ করা হয়। একাধিক স্কুল-কলেজ ছাত্র জানায়, লোকাল বাস সার্ভিস না থাকায় ভাড়া গুনতে শিক্ষার্থী ও স্বল্প আয়ের চাকুরিজীবিরা বেশি হিমশিম খাচ্ছে। লোকাল বাসের ৫ টাকার ভাড়া সিএনজি অটোরি´াতে ১৫-২০ টাকা দিতে হচ্ছে। সড়কের একাধিক বাস চালক বলেন, সিএনজি চালিত অটোরিক্সা ও ছোট যান চলায় লোকাল বাসে যাত্রী কম। মালিকপক্ষ লোকসান দিয়ে সড়কে বাস চালাতে চান না। বিরতিহীন বাসে লোকসান কম হয়। সময় বাঁচানোর জন্যে যাত্রীরা লোকাল বাসে উঠতে চান না। তাই লোকাল বাস তুলে নেয়া হয়েছে। যাত্রীরা জানান, কাপ্তাই থেকে চট্টগ্রাম গামী যাত্রী পরিবহন বাসেই অনিয়ম ও যাত্রী হয়রানি দিন দিন বেড়ে চলছে। ৪০ সিটের বাসে কখনো কখনো ৬০ জনের অধিক যাত্রীও উঠানো হয়। যাত্রীরা আরও জানান, বিরতিহীন পরিবহনধারী বাসগুলো সময়মতো টার্মিনাল থেকে ছাড়লেও ২/১ মিনিট পর প্রধান সড়ক মুখে এসে আবারও যাত্রী উঠায়। আর দাঁড়ানো অবস্থায় ঠাসাঠাসি যাত্রী নিয়ে ধীরগতিতে চলতে থাকে। যাত্রী উঠা নামার কারনে বিরতিহীনে দ্বিগুণ সময় লাগে গন্তব্যে পৌঁছতে। যাত্রী ভোগান্তি কমাতে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে সড়কে যান চলাচল চালু করতে বাস মালিকপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছে যাত্রীরা।