করোনায় ঈদে পর্যটক শূন্য পারকি সৈকত

সুপর্যটক শূন্য পারকি সৈকত-সুপ্রভাত

সুমন শাহ্‌, আনোয়ারা :

ঈদ মানে আনন্দ। আর প্রতিবছর এই বিশেষ দিনগুলোতে পরিবার নিয়ে সবাই কমবেশি ঘুরতে বের হয়। পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠে পর্যটন জায়গাগুলো। তবে এবার মহামারী করোনার কারণে বন্ধ সব বিনোদনের জায়গাগুলো। পর্যটকদের উপস্থিতি না থাকায় খালি পড়ে ছিল দক্ষিণ চট্টগ্রামের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র পারকি সমুদ্র সৈকত। প্রতি ঈদে হাজারো পর্যটকের উপসি’তিতে মুখরিত থাকে সৈকতে। করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে এখন শুধুই নীরবতা। নেই পর্যটকের আনোগোনা, ফটোগ্রাফার, বিচ বাইক চালক কিংবা হকারদের। দৌড়ঝাঁপ, আড্ডা, চেয়ারের সারি ও চিরচেনা দৃশ্যের কিছুই নেই এখন। পুরোটাই থেমে গেছে কোলাহল।

শুক্রবার বিকালে সৈকতে গিয়ে দেখা গেছে যেন এক বিরানভূমি। চারদিকে খাঁ খাঁ শূন্যতা। বন্ধ রয়েছে সৈকতে এলাকার দোকানপাট ও নেই ভাসমান দোকানিরা। ঈদের দিন থেকে কিছু স্থানীয় পর্যটক, ফটোগ্রাফার, বিচ বাইক চালক  ও হকারদের আনাগোনা দেখা গিয়েছে। পারকি সমুদ্র সৈকতে প্রতি বছর পবিত্র ঈদুল ফিতর আসলেই পর্যটক মুখরিত থাকতো। ঈদে পর্যটকে থাকতো বাড়তি চাপ, সে সাথে প্রশাসনের পক্ষ থেকে থাকতো পর্যটকদের জন্য বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা।

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সৈকত চরে পর্যটকের জনসমাগমে সরকারের নিষেধাজ্ঞা থাকায় ফাঁকা পারকি সমুদ্র সৈকত।

সমুদ্র সৈকত ঘিরে অসমাজিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ থাকলেও প্রশাসনের কঠোর পদড়্গেপে তা এখন এক প্রকার বন্ধ। ভাসমান দোকান উচ্ছেদসহ অবৈধভাবে গড়ে উঠা দোকানপাট গুলোও গুঁড়িয়ে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। অনেকেই ভ্রাম্যমাণ দোকান করে জীবিকা নির্বাহ করলেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণের বিপাকে পড়েছেন এসব দোকানিরা।

পারকি সৈকতের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ শাহেদ বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে প্রশাসন পর্যটকদের নামতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তাই পর্যটকরা আসছেন না; সেহেতু আমাদের ব্যবসাও হচ্ছে না। তাই দোকান বন্ধ করে ঘরে বসে আছি। আরেক ব্যবসায়ী আনিসুর রহমান বলেন, এখন দোকান বন্ধ রাখা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। করোনাভাইরাসের মহামারিতে যেখানে সব বন্ধ; সেখানে পারকি কী? এখন একটু চিন্তায় রয়েছি সংসার চালাবো কি করে। বটতলী থেকে ঘুরতে আসা মো. মনির উদ্দিন বলেন, ঈদের পর পর্যটন শূন্য পারকি সৈকত আর কোনদিন দেখি নাই।

পারকি বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জামিরুল ইসলাম বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে ইউএনও স্যারের নির্দেশে প্রতিদিন আমরা সরেজমিনে গিয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছি। যাতে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। পারকি বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভাপতি ও আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ জোবায়ের আহমেদ বলেন, বিনোদন কেন্দ্র শুধু নয়। সব কোলাহলই থেমে গেছে। এছাড়া বিদেশ ফেরত যারা হোম কোয়ারেন্টাইনে না থাকলে তাদের বিরম্নদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। বিপাকে পড়া পারকি সৈকতের দোকানিদেরকে ইতিমধ্যে খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।