এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে: শেষের পথে ২০০ পিলারের কাজ

যানজট এড়াতে তিন দুই তিন পদ্ধতিতে দেয়া হচ্ছে টিনের বেষ্টনী: প্রকল্প পরিচালক#

ভূঁইয়া নজরুল :
ইপিজেডের পর বন্দরটিলা এলাকায় রাস্তার মাঝখানে টিনের বেষ্টনী দিয়ে চলছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ। একটু সামনে যাওয়ার পর দেখা যায় বেষ্টনী শেষ, আবারো স্বাভাবিক সড়ক। আরো সামনে নেভি হাসপাতাল গেটের সামনে দেখা যায় আবারো বেষ্টনী দিয়ে ভেতরে চলছে নির্মাণকাজ। অর্থাৎ, খ- খ- করে চলছে নির্মাণকাজ।
সরেজমিনে খ- খ- দৃশ্য দেখা যায় সিমেন্ট ক্রসিং পর্যন্ত। সিমেন্ট ক্রসিং থেকে কাঠগড় হয়ে সিবিচ পর্যন্ত পিলার নির্মাণ প্রায় শেষ। গত বছরের মে মাস থেকে কাজ শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত কতটা কাজ হয়েছে জানতে চাইলে প্রকল্পের পরিচালক ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) নির্বাহি প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘বর্তমানে ৫০ শতাংশ এলাকায় কাজ চলছে এবং মোট কাজের ৩০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ৪৫০ পিলারের মধ্যে ১১৬টি পিলারের কাজ শেষ হয়েছে এবং ৮৪টি পিলার বসানোর কাজ চলছে।’
গত শুক্রবার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সল্টগোলা থেকে সিমেন্ট ক্রসিং পর্যন্ত এলাকায় পুরোদমে কাজ চলছে। এই তিন কিলোমিটারের মধ্যে এখন শুধু পিলার বসানোর কাজ চলছে। এছাড়া সিমেন্ট ক্রসিং থেকে সিবিচ পর্যন্ত ১১৬টি পিলারের নির্মাণ কাজও প্রায় শেষ। এসব পিলারের মধ্যে অনেকগুলোর ওয়াইশ্যাপ বসানো হয়েছে। এখন ওয়াইশ্যাপের মধ্যে শুরু হয়েছে গার্ডার বসানোর কাজ।
রোড ডিভাইডারের জায়গায় টানা বেষ্টনী না দিয়ে গ্যাপ গ্যাপ দিয়ে কাজ করা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘আমরা যানজট কমানোর জন্য তিন দুই তিন পদ্ধতিতে কাজ করছি।’
তিন দুই তিন পদ্ধতি সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘তিনটি পিলারের নির্মাণের জন্য বেষ্টনী দিয়ে কাজ শুরুর পর দুটি পিলারের জায়গা খালি রাখা হবে। পরবর্তীতে আবারো তিনটি পিলারের জন্য বেষ্টনী দেয়া হবে। এই পদ্ধতিতে আমরা সল্টগোলা থেকে সিমেন্ট ক্রসিং পর্যন্ত ৮৪টি পিলার বসানোর কাজ করছি। এতে এই এলাকায় যানজট দুর্ভোগ কমে আসবে। এছাড়া করোনাকাল হওয়ায় এখন রাস্তায় যানবাহন কম তাই দ্রুত কাজ এগিয়ে নেয়া হচ্ছে।’

লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ৯টি পয়েন্টে উঠা-নামার জন্য ১৪টি র‌্যাম রয়েছে। কিন্তু যানজট দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে সাগর পাড়ের আউটার রিং রোড নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় ধীরে চলছিল এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রকল্পের উদ্বোধন হলেও বাস্তবিক অর্থে কাজ শুরু হয় মে মাসে। প্রথমে কাঠগড় থেকে থেকে সিবিচ পর্যন্ত এবং পরবর্তীতে সিমেন্ট ক্রসিং থেকে কাঠগড় পর্যন্ত নির্মাণকাজ চলমান থাকে।
উল্লেখ্য, সরকারি অর্থায়নে ৩ হাজার ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্পের বাস্তবায়ন করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স রেনকিন জেভি। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম শহর থেকে বিমানবন্দরমুখী মানুষ দ্রুত যাতায়াত করতে পারবে। একইসাথে সাগরপাড়ে আউটার রিং রোড চালু হচ্ছে, সেই রোড দিয়েও মানুষ সহজে বিমানবন্দর যেতে পারবে। অর্থাৎ, বিমানবন্দরমুখী যাতায়াতের আগে যেখানে মাত্র একটি রাস্তা ছিল এখন বিকল্প রাস্তাও তৈরি হচ্ছে। এতে চট্টগ্রাম মহানগরীর যাতায়াত ব্যবস্থায় পরিবর্তন আসবে।