এক বছরে শনাক্ত সাড়ে ৫ লাখ রোগী

করোনা টেস্টের জন্য নমুনা নেওয়া হচ্ছে

দেশে করোনার একবছর

সুপ্রভাত ডেস্ক <<
দেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার ঠিক এক বছরের মাথায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা সাড়ে ৫ লাখ ছাড়িয়ে গেল।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৬০৬ রোগী শনাক্ত হয়েছে দেশে; তাতে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছে ৫ লাখ ৫০ হাজার ৩৩০ জনে। খবর বিডিনিউজের।
আর গত এক দিনে এ ভাইরাসে আরও ১১ জনের মৃত্যু হওয়ায় মৃতের মোট সংখ্যা পৌঁছছে ৮ হাজার ৪৬২ জনে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ১ হাজার ৩৭ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ৩ হাজার ৩ জন হয়েছে। গতবছরের ৮ মার্চ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে প্রথম রোগী শনাক্ত হয়, তিন মাস পর ১৮ জুন তা ১ লাখ ছাড়িয়ে যায়।
এর ঠিক এক মাস পর ১৮ জুলাই শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ায় ২ লাখে। এর পরের এক লাখ রোগী শনাক্ত হয় এক মাস নয় দিনে, ২৬ আগস্ট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছাড়ায় তিন লাখ।
শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৪ লাখ ছাড়িয়ে যায় এর দুই মাস পর, ২৬ অক্টোবর। ৫৫ দিন পর গত ২০ ডিসেম্বর তা পাঁচ লাখে পৌঁছায়। এর পরের ৭৭ দিনে শনাকত রোগীর তালিকায় যুক্ত হল আরও ৫০ হাজার নাম। এর মধ্যে গত ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ২৩ জানুয়ারি তা আট হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে গত বছরের ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।
বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ১১ কোটি ৬৫ লাখ পেরিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৫ লাখ ৮৮ হাজার।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ৩৩তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৩৯তম অবস্থানে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১১৮টি আরটি-পিসিআর ল্যাব, ২৯টি জিন-এক্সপার্ট ল্যাব ও ৭২টি র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন ল্যাবে অর্থাৎ সর্বমোট ২১৯টি ল্যাবে ১৪ হাজার ৯২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৪১ লাখ ৪৬ হাজার ২০৫টি নমুনা।
২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৪ দশমিক ৩০ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ২৭ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯১ দশমিক ৪০ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩১ লাখ ৮৪ হাজার ৬৩৪টি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়েছে ৯ লাখ ৬১ হাজার ৫৭১টি। গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ৯ জন পুরুষ এবং ২ জন নারী। তাদের সবাই হাসপাতালে মারা গেছেন।
তাদের ৭ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি, ২ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে এবং ১ জন করে মোট ২ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ ও ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ছিল। মৃতদের মধ্যে ৬ জন ঢাকা বিভাগের, ৪ জন চট্টগ্রাম বিভাগের এবং ১ জন খুলনা বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৮ হাজার ৪৬২ জনের মধ্যে ৬ হাজার ৩৯৭ জনই পুরুষ এবং ২ হাজার ৬৫ জন নারী। তাদের মধ্যে ৪ হাজার ৭১২ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়াও ২ হাজার ৯৪ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৯৫৮ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৪২৪ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১৭৩ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৬৪ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ৩৭ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম।
এর মধ্যে ৪ হাজার ৭৩৫ জন ঢাকা বিভাগের, ১ হাজার ৫৫৯ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৪৮১ জন রাজশাহী বিভাগের, ৫৬৩ জন খুলনা বিভাগের, ২৫৪ জন বরিশাল বিভাগের, ৩১১ জন সিলেট বিভাগের, ৩৬৩ জন রংপুর বিভাগের এবং ১৯৬ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।