উত্তর কাট্টলী দিয়ে শুরু হলো জোনভিত্তিক লকডাউন

আওতামুক্ত থাকবে বিসিক শিল্প নগর ও কনটেইনার টার্মিনাল
সচল থাকবে ৬টি প্রবেশপথ, খোলা থাকবে ব্যাংক, ৪০টি মুদি দোকান ও ফার্মেসি

 

নিজস্ব প্রতিবেদক :

কঠোর লকডাউন শিথিলতায় দিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে। প্রথমদিকে সবকিছু বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও মঙ্গলবার সমন্বয় সভায় অনেক  ক্ষেত্রে ছাড় দেয়া হয়েছে। জীবন ও জীবিকার স্বার্থে লকডাউনের আওতামুক্ত রাখা হয়েছে বিসিক শিল্প নগরী ও কনটেইনার টার্মিনালকে। একইসাথে মুদি দোকান ও ফার্মেসি খোলা রাখার পাশাপাশি যাতায়াতের জন্য ৬টি প্রবেশপথ খুলে দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১২টার পর থেকে শুরু হলো ২১ দিনের লকডাউন।

আর এই সিদ্ধান্তে আরো একবার শিথিল লকডাউন শুরু হতে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন পাহাড়তলী থানার ওসি মাঈনুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রথম থেকেই সবকিছু বন্ধ রাখার পক্ষে ছিলাম। কারণ কিছু বন্ধ ও কিছু খোলা রাখা হলে কার্যকর লকডাউন হবে না। এতে করোনার বিসত্মারও কমবে না। কিন’ শেষ মূহূর্তে বিসিকের শিল্প কারখানা খোলা রাখায় এর সুফল পাওয় নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।’

তিনি বলেন, বিসিক শিল্প এলাকার গার্মেন্টসগুলোতে বিভিন্ন এলাকা থেকে শ্রমিকরা আসবে। এতে তো করোনা এক স্থান থেকে আরেক স্থানে ছড়াবে। তাহলে আর লকডাউনের কার্যকরিতা কোথায় থাকলো?

এদিকে মঙ্গলবার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মিলনায়তনে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের সমন্বয় সভায় লকডাউনের শিথিলতার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। সভায় বলা হয়, মানুষের জীবন-জীবিকা ও অর্থনীতির স্বার্থে ওয়ার্ড এলাকায় অবসি’ত বিসিক শিল্প নগর ও কনটেইনার টার্মিনাল লকডাউনের আওতামুক্ত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেড়্গেত্রে শিল্প নগরের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি  মেনে চলার ব্যাপারে নিশ্চয়তা প্রদান শর্তে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হবে। একইসাথে লকডাউন চলাকালীন সময়ে অলংকার মোড় ও একেখান এলাকার বাস স্টেশন সিটি গেইটের বাইরে সরিয়ে নেওয়া হবে। এছাড়া প্রাথমিকভাবে ওয়ার্ডের ২০টি প্রবেশপথ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও মানুষের সুবিধার্থে ঈশান মহাজন রোড,কালির হাট রোড, কৈবল্যধাম  রোড, শাহের পাড়া রোড,সাগরিকা বিটাক রোডসহ ছয়টি সড়ক খোলা রাখা হবে।

লকডাউন বিষয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, নীতিগত সিদ্ধানেত্ম ২১ দিনের লকডাউনে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিসিক শিল্প নগরকে লকডাউনের আওতামুক্ত রাখা হচ্ছে। এছাড়া এলাকায় অবস্থিত অন্যান্য কলকারখানা কর্তৃপক্ষের সাথেও আলোচনা হয়েছে। সাধারণ ছুটি চলাকালীন সময়ে যাতে শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন ভাতাদি পরিশোধ নিশ্চিত করা হয় সে বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, লকডাউনের সমসত্ম কার্যক্রম মনিটরিংয়ে কাউন্সিলরকে আহবায়ক করে প্রশাসন প্রতিনিধি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, রাজনৈতিক সংগঠন প্রতিনিধি, ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন, সমাজ কল্যাণ সমিতি,এনজিও প্রতিনিধি এবং ধর্মীয় পুরোহিতদেরকে অন্তর্ভুক্ত করে কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এদিকে লকডাউন চলাকালীনন সময়ে, ৪০টি মুদি দোকান খোলা থাকবে। এসব দোকান এলাকাভিত্তিকভাবে কাউন্সিলর নির্ধারন করে দেবে। আর প্রথম সপ্তাহে এগুলো বন্ধ থাকবে। এছাড়া কোভিড ও নন কোভিড রোগীদের জন্য ওয়ার্ড এলাকায় অ্যাম্বুলেন্স সুবিধা থাকবে, থাকবে নমুনা দেয়ার বুথ, ভ্যানের মাধ্যমে মানুষকে ডোর টু ডোর সবজিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় সেবা প্রদান করা হবে।

উলেস্নখ্য, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ১০টি ওয়ার্ড লাল তালিকাভুক্ত রয়েছে। এই ১০টি ওয়ার্ডের মধ্যে প্রাথমিকভাবে ১০ নম্বর উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডকে মঙ্গলবার রাত ১২টার পর থেকে ২১ দিনের জন্য লকডাউন শুরু হচ্ছে।