ইমাম হোসাইনের (রা) শাহাদাতের সিঁড়ি বেয়ে উড়ছে ইসলামের ঝান্ডা

শাহাদাতে কারবালা মাহফিলে আল্লামা আকবর ইহসানি

কারবালা ময়দানে দৃশ্যত হযরত ইমাম হোসাইন (রা) দুরাচারি ইয়াজিদিদের হাতে শাহাদাতবরণ করলেও বাস্তবে পতন ও বিনাশ ঘটেছে নৃশংস ইয়াজিদিদের। কারণে সেদিন ইমাম হোসাইন (রা) শাহাদাতবরণ করার মাধ্যমে দ্বীন ইসলামের স্বকীয় মর্যাদাই সমুন্নত করেছেন। হযরত ইমাম হোসাইনের (রা) শাহাদাতের সিঁড়ি বেয়ে আজ বিশ্বজুড়ে ইসলামের ঝান্ডা পত পত করে উড়ছে। কিয়ামত পর্যন্ত উড়তেই থাকবে।

জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে আন্তর্জাতিক শাহাদাতে কারবালা মাহফিলের ৭ম দিনে গতকাল শনিবার বিদেশি আলোচক খতিবে লাসানি আল্লামা আকবর ইহসানি এ কথা বলেন।

শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের আয়োজনে গতকাল সভাপতিত্ব করেন কুতুবদিয়া দরবার শরীফের সাজ্জাদানশিন পীরে তরিকত মাওলানা শাহ আবদুল করিম কুতুবী। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমদ। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও চেয়ারম্যান এবং পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ইয়াজিদের কাছে টাকা ও ক্ষমতা ছিল। কিন্তু ইজ্জত ও সম্মান সে অর্জন করতে পারেনি। তেমনিভাবে আজও যারা দুর্নীতিবাজ, ক্যাসিনো স¤্রাট, ঘুষখোর ও অনাচারী তাদের মাঝে অঢেল টাকা থাকতে পারে। কিন্তু তাদের জীবনে শান্তি নেই। তারা মানুষের সম্মান অর্জনে ব্যর্থ। আহলে বায়তে রাসূলের (দ) সম্মান ও তাজিম কিয়ামত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। কিয়ামত পর্যন্ত এ সম্মান ও মর্যাদা সমুন্নত থাকবে। সুফি মিজানুর রহমান বলেন আমরা নামাজে, দরূদ শরিফে প্রিয় নবী (দ) ও আহলে বায়তে রাসূল (দ) কে স্মরণ ও সম্মান করি। তাঁদের স্মরণ ছাড়া কোনো নামাজ ইবাদত বন্দেগিই আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। নবী পরিবারের প্রতি তাজিম সম্মান তাই ফরজ। আহলে বায়তে রাসূল (দ) আমাদের ঈমান ও অস্তিত্বের প্রতীক।

প্রধান অতিথি মোছলেম উদ্দিন আহমদ এমপি বলেন, কারবালা মানে সত্য ও ন্যায় নীতি প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। হযরত ইমাম হোসাইন (রা) হাসিমুখে জীবন দিয়েছেন, তবুও মিথ্যা, অন্যায় ও ইয়াজিদি জুলুমতন্ত্রের কাছে আপস করেননি। তাই, কারবালার চেতনায় অন্যায় অবিচার প্রতিরোধে আমাদের কঠিন শপথ ও প্রত্যয় গ্রহণ করতে হবে।

হযরত ইমাম জয়নুল আবেদিনের মর্যাদা আলোচনায় মাওলানা মুহাম্মদ আবদুর রহিম আজহারি বলেন, আহলে বায়তে রাসূল (দ) আমাদের ঈমান আক্বিদা রক্ষার জন্য কারবালা প্রান্তরে জীবন উৎসর্গ করেছেন। না হয় আমরা দ্বীন ইসলামের মহা নেয়ামত পেতাম না।

হালিশহর মাদ্রাসা-এ-তৈয়্যবিয়া ইসলামিয়া সুন্নিয়ার প্রভাষক মাওলানা ইউনুচ তৈয়বী বলেন, হযরত ইমাম হোসাইন (রা) সত্য, ন্যায়, ইনসাফ ও মানবতার প্রতীক। সত্য ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠার জন্য নবী পরিবার কারবালা প্রান্তরে জীবন দিয়েছেন বলেই আমরা অবিকৃত ইসলাম পেয়েছি।

মাহফিলে কোরআন মজিদ থেকে তেলাওয়াত করেন বিশ্বনন্দিত কারী শায়খ আহমদ নায়না (মিশর) ও আহমদ বিন ইউসুফ আল আজহারী।

সভাপতির বক্তব্যে পীরজাদা মাওলানা আব্দুল করিম কুতুবী বলেন, হযরত ইমাম হাসান (রা) ও হযরত ইমাম হোসাইন (রা) জান্নাতে যুবকদের সর্দার। প্রিয় নবী (দ) তাঁদের ভালোবেসেছেন এবং উম্মতকেও ভালোবাসতে নির্দেশনা দিয়েছেন। তাঁদের ভালোবাসাই ঈমানের দাবি। ড. মুহাম্মদ জাফর উল্লাহ ও ব্যাংকার হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ ছালামত উল্লাহর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মাহফিলে অতিথি ছিলেন পিএইচপি ফ্যামিলির ডাইরেক্টর মুহাম্মদ আখতার পারভেজ চৌধুরী, জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের খতিব আল্লামা সৈয়দ আবু তালেব মুহাম্মদ আলাউদ্দিন আলকাদেরী, শুলকবহর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মুহাম্মদ মোরশেদুল আলম, সৈয়দ মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ, চান্দগাঁও ওয়ার্ড কাউন্সিলর এসরারুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ দিদারুল আলম চৌধুরী, ব্যারিস্টার আবু সাঈদ মুহাম্মদ কাশেম, রিহ্যাব চট্টগ্রাম প্রেসিডেন্ট আব্দুল কৈয়ুম চৌধুরী।

মিলাদ কিয়াম শেষে দেশ ও বিশ্ববাসীর শান্তি-সমৃদ্ধি-কল্যাণ এবং বিশ্বের নির্যাতিত মানবতার পরিত্রাণ কামনায় মুনাজাত করা হয়।

প্রতিদিন সুফি টিভি ইউটিউব ফেসবুকে মাহফিল সরাসরি লাইভ দেখানো হচ্ছে। মসজিদের নিচতলায় পর্দা সহকারে মহিলাদের জন্য আলোচনা শোনার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি