ইউনাইটেডে অগ্নিকাণ্ড : ৪ পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা করে দিতে হাইকোর্ট নির্দেশ

সুপ্রভাত ডেস্ক :

রাজধানীর গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে অগ্নিকান্ডে মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত চার পরিবারকে ১৫ দিনের মধ্যে ৩০ লাখ টাকা করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি এম, ইনায়েতুর রহিমের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার। রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার অনীক আর হক, ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম, ব্যারিস্টার মুনতাসির উদ্দিন আহমেদ ও রিটকারী নিয়াজ মুহাম্মদ মাহবুব।
ইউনাইটেড হাসপাতালের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, মোস্তাফিজুর রহমান খান।
আইনজীবী নিয়াজ মাহবুব সাংবাদিকদের বলেন, গত ২৯ জুন আদালত সমঝোতা করতে বলেছিলো। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সবাইকে চিঠি দেয়। সবাই যাওয়ার পরে তারা যে অর্থ দিতে চেয়েছিলো এতে চার পরিবার রাজি হয়নি। শুধু মনির হোসেনের পরিবার ২০ লাখ টাকায় সমঝোতা করে। আজ শুনানি শেষে আদালত বাকি ৪ পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা করে ১৫ দিনের মধ্যে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
গত ৩০ মে রিট আবেদনটি দায়ের করেন ব্যারিস্টার নিয়াজ মুহাম্মদ মাহবুব। ১ জুন আরও একটি রিট করেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রেদোয়ান আহমেদ রানজীব ও ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ।
পরে গত ২ জুন বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের কাছে ১৪ জুনের মধ্যে আলাদা প্রতিবেদন চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। সে অনুসারে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
পুলিশের দেয়া প্রতিবেদনে ইউনাইটেড হাসপাতালের গাফিলতির কথা রয়েছে। রাজউক বলছে, করোনার জন্য আলাদা করে আইসেলেশন ইউনিট করতে তাদের অনুমতি নেয়া হয়নি। অন্যদিকে ফায়ার সার্ভিস বলছে, অগ্নিকান্ডের সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কার্যকর পদক্ষেপ নিলে রোগীদের মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হতো।
এরপর আদালত ২৯ জুন সমঝোতা করতে আদেশ দিয়েছিলেন। তবে অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগের মামলার তদন্তও দ্রুত সম্পন্ন করতে বলেছিলেন।
গত ২৮ মে ইউনাইটেড হাসপাতালের চিফ অব কমিউনিকেশনস অ্যান্ড বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ডা. সাগুফা আনোয়ারের পাঠানো বার্তায় নিহত পাঁচজনের পরিচয় শনাক্ত করা হয়। নিহতদের মধ্যে চারজন পুরুষ ও একজন নারী। তারা হলেন- রিয়াজুল আলম (৪৫), খোদেজা বেগম (৭০), ভেরুন অ্যান্থনি পল (৭৪), মো. মনির হোসেন (৭৫) ও মো. মাহবুব (৫০)।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, গত ২৮ মে বুধবার আনুমানিক রাত সাড়ে ৯টার দিকে মূল ভবনের বাইরে হাসপাতাল সংলগ্ন করোনা আইসোলেশন ইউনিটে সম্ভবত বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটের মাধ্যমে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই আগুন আইসোলেশন ইউনিটের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। সে সময় আবহাওয়া খারাপ ছিল ও বিদ্যুৎ চমকাচ্ছিল। বাতাসের তীব্রতায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেখানে ভর্তি পাঁচজন রোগীকে বাইরে বের করা সম্ভব হয়নি। তারা ভেতরেই মারা যান। আইসোলেশন ইউনিটের পাঁচজনই করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি ছিলেন।