আরো এক মাসের বেতন দিতে ঋণ চায় বিজিএমইএ

সুপ্রভাত ডেস্ক :
শ্রমিকদের আগস্ট মাসের বেতন পরিশোধের জন্য সহজ শর্তে সরকারের কাছে টাকা চেয়ে চিঠি দিয়েছে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ। গত ২০ আগস্ট নতুন করে সহজ শর্তে ঋণ চেয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কাছে এই চিঠি দেন সংগঠনটির সভাপতি ড. রুবানা হক। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, তৈরি পোশাকর রফতানি বাণিজ্যের সক্ষমতা টিকিয়ে রাখার লক্ষ্যে শ্রমিক-কর্মচারীদর অন্তত আগস্ট মাসের বেতনভাতাদি পরিশোধে জুলাইয়ের ন্যায় সহজ শর্তে ও স্বল্প সুদে ঋণ দিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
ওই চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে এখনও সংকটের মধ্যে রয়েছে তৈরি পোশাক শিল্প। প্রতিনিয়ত আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড ও ক্রেতারা তাদের বর্তমান ক্রয়াদেশ স্থগিত/বাতিল করছে। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী এ পর্যন্ত ৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি রফতানি আদেশ বাতিল/স্থগিত হয়েছে, যা প্রতিদিনই বাড়ছে বলেও উল্লেখ করা হয়। আগের চলতি শিপমেন্টগুলোর বিপরীতে পেমেন্ট পেতেও ৮-৯ মাস সময় লেগে যেতে পারে। ক্রয়াদেশ বাতিল/স্থগিত ও নির্দিষ্ট সময়ে পেমেন্ট না পাওয়ার ফলে পোশাক খাত নিদারুন আর্থিক সংকটের মধ্যে রয়েছে।
এর আগে করোনা মহামারি শুরু হলে মার্চের শেষ দিকে (২৫ মার্চ) শুধু শ্রমিকদের বেতন দেয়ার জন্য সরকারের কাছ থেকে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ পায় গার্মেন্টসসহ রফতানিমুখী শিল্প। সে সময় বলা হয়, পরবর্তী তিন মাসের বেতন পরিশোধ করতে এই অর্থ সহায়তা পাবেন শিল্প মালিকরা। এর টাকা নিলে ২ শতাংশ সুদ ও সময় মতো কিস্তির অর্থ পরিশোধ না করলে বকেয়া কিস্তির উপর দ- সুদ আরোপেরও শর্ত দেয়া হয়।
এদিকে চলতি মাসের মাঝামাঝি করোনাকালীন তৈরি পোশাক খাতের স্থগিত হওয়া ক্রয়াদেশের ৮০ শতাংশই আবার রফতানি করা হচ্ছে বলে জানায় বিজিএমইএ। যার বাজার মূল্য ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি। সেই সঙ্গে ক্রেতাদের নতুন অর্ডারের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে কম দামি পণ্যের অর্ডার তুলনামূলক বেশি আসছে বলেও সেসময় জানায় সংগঠনটি। এর আগে ২৪ জুলাই বিজিএমইএ জানিয়েছে, আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত সচল কারখানাগুলোর সক্ষমতার মাত্র ৩৫ শতাংশ কার্যাদেশ রয়েছে।
বিজিএমইএ- এর তথ্য মতে, করোনা শুরুর পর পোশাক শিল্পে প্রায় সোয়া তিন বিলিয়ন (৩১৮ কোটি) ডলারের ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিত হয়। এপ্রিলে মাত্র ৩৬ কোটি ডলারের পোশাক রফতানি হয়। মে মাসে হয় ১২৩ কোটি ডলারের। জুনে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২২৫ কোটি ডলারে। আর চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে (জুলাই) তৈরি পোশাক রফতানি হয় ৩২৪ কোটি ডলারের। আর চলতি মাসের (আগস্ট) প্রথম ২২ দিনে ২৩৭ কোটি ৫৫ লাখ ডলারের পোশাক রফতানি হয়েছে। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪৫ দশমিক ৮৩ শতাংশ। খবর : ডেইলিবাংলাদেশ’র।