আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে নেতানিয়াহু’র বিচার দাবি

বিক্ষোভ সমাবেশ

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ফিলিস্তিনে গণহত্যার নায়ক আখ্যা দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে তার বিচারের দাবি এসেছে চট্টগ্রামের এক সমাবেশ থেকে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে নগরীর চেরাগী পাহাড় চত্বরে সর্বস্তরের সংস্কৃতিকর্মী ও ও সচেতন নাগরিক সমাজের উদ্যোগে ফিলিস্তিনের গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবিতে এক বিক্ষোভ ও সংহতি সমাবেশে এ দাবি জানানো হয়।

গাজায় প্রতি ১০ মিনিটে একজন শিশুকে হত্যা করা হচ্ছে জানিয়ে একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি ও প্রাবন্ধিক আবুল মোমেন বলেন, ‘প্রতিদিন আমরা টেলিভিশনে, সংবাদপত্রে যা পড়ছি তাতে এটা বিশ্বাস করা কঠিন যে আমরা সুস্থ মানুষ। আমরা মানুষ, এ কথাটা ভাবাও কঠিন মনে হচ্ছে। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, গাজা এখন শিশুদের কবরস্থান।’ ‘ওখানে প্রতি ১০ মিনিটে একজন শিশুকে হত্যা করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত সাড়ে চার হাজার শিশু প্রাণ হারিয়েছে। ১০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে যারা বেসামরিক নাগরিক। তাদের মধ্যে সিংহভাগ নারী ও শিশু।’

৭৫ বছর ধরে ইসরাইল ফিলিস্তিনে খুনি আগ্রাসন চালাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যে কোনো সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। হামাস ইসরাইলে হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ নাগরিককে হত্যা করেছে ও ২৪০ জনকে জিম্মি করেছে আমরা তার বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গে এ কথাও আমরা স্মরণ করিয়ে দিতে চায় ১৯৪৮ সাল থেকে এ অঞ্চলে ইহুদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য ফিলিস্তিনি নাগরিকদের দেশ থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। গত ৭৫ বছর ধরে ইসরাইল তার খুনি আগ্রাসন চালাচ্ছে। আশেপাশের আরও ভূখ- মিশর, সিরিয়া ও জর্ডান থেকে তারা ভূমি দখল করে তাদের আবাসন বানিয়েছে।’

ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে কবি আবুল মোমেন বলেন, ‘বিংশ শতাব্দিতে একটি জাতি ও সম্প্রদায় দেশান্তর হয়ে জীবন কাটাচ্ছে। তাদের চারটি প্রজন্ম সেখানে বড় হয়েছে। সে মানুষগুলো এখনও দেশ পায়নি। আমরা তাদের স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবি জানাই। ইসরাইলের গণহত্যা বন্ধের দাবি জানাই। আমরা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে এ গণহত্যার নায়ক ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানেয়াহুসহ তার সঙ্গীদের বিচার দাবি করছি।’

কবি ও প্রাবন্ধিক আবুল মোমেনের সভাপতিত্বে ও কবি কামরুল হাসান বাদলের সঞ্চালনায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সংক্ষিপ্ত করা সমাবেশে ফিলিস্তিনি কবি আহলাদ বরশাদের লেখা ‘সৈন্যদের আমি যেভাবে মারি’ কবিতাটি পাঠ করেন আবৃত্তিশিল্পী রাশেদ হাসান ও গণসংগীত ‘যুদ্ধ নয়,তুলো আওয়াজ’ গান পরিবেশনা করেন উদীচি চট্টগ্রাম, রক্তকরবী ও ফেইমের শিল্পীরা।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন উদীচি চট্টগ্রামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি চন্দন দাশ, সাধারণ সম্পাদক শীলা দাশ গুপ্ত, বোধন আবৃত্তি শিল্পীর সাধারণ সম্পাদক প্রণব চৌধুরী, মিলি চৌধুরী, প্রবাল দে, প্রশান্ত বড়ুয়া ,দৃষ্টি চট্টগ্রামের সভাপতি মাসুদ বকুল ও ফুলকি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বিজ্ঞপ্তি