আনোয়ারায় কর্মজীবী নারীর আস্থা

আনন্দধারা বেবি কেয়ার

সুমন শাহ্, আনোয়ারা :

কর্মজীবী মা-বাবার হাজারো চিন্তার সমাধান হতে পারে বেবি কেয়ার সেন্টার বা শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র। আনোয়ারা উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়নের পূর্ব বৈরাগ আল মোজাদ্দেদ হাউসে নাসমিন আকতার (২৪) নামে এক নারী উদ্যোক্তা গড়ে তুলেছেন বেবি কেয়ার ‘আনন্দধারা’। দেশে কর্মজীবী মায়ের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তার শিশু সন্তানটির গোসল, খাওয়া, ঘুমানো, পড়ালেখা, হোমওয়ার্ক এ নিয়ে সারাক্ষণ দুশ্চিন্তা থাকে মায়ের। আনোয়ারা-কর্ণফুলী অঞ্চলের কর্মজীবিসহ সাধারণ অভিভাবকদের সন্তান নিয়ে দুশ্চিন্তা দূর করতে উপজেলার বৈরাগে গড়ে উঠেছে বেবি কেয়ার সেন্টার ‘আনন্দধারা’। এখানে ১ বছর থেকে ৮ বছর বয়স পর্যন্ত বাচ্চাদের জন্য শৈশবের দ্বার খোলা। মেয়ে-শিশুদের বেলায় আরেকটু বেশি বয়স পর্যন্তও ছাড় দেওয়া হয়। সকাল ৮টা  থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বাচ্চারা শৈশবে থাকে। আর সারা মাসের জন্য মাত্র দুই হাজার টাকা ফি রাখা হয়েছে এখানে। সারা দিনের যতেœর পাশাপাশি প্রি-স্কুলিং, আঁকা, গান গাওয়া, নাচসহ ইত্যাদির প্রাথমিক শিক্ষাও শৈশব দিয়ে থাকে। বাচ্চার স্বাস্থ্যসম্মত খাবারও শৈশব সরবরাহ করা হবে এখানে। সিসি ক্যামরায় রয়েছে নজরদারি। বাচ্চাকে সকালে বেবি কেয়ার সেন্টারে রেখে নিশ্চিন্তে অফিসে যেতে পারবে। ফেরার পথে আবার বাচ্চাকে নিয়ে ফিরতেও পারবে। সন্তানের নিত্যদিনের কাজগুলো যেমন গোসল, খাওয়া, পড়ানো, হোমওয়ার্ক করে দেওয়া সবটাই করে দিবে সেন্টারের কর্মীরা। নিজ উদ্যোগে নাসমিন আকতার নামে এক নারী গড়ে তুলেছেন বেবি কেয়ার সেন্টার ‘আনন্দধারা’। যেখানে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত বাচ্চাদের দেখভাল করা হবে।বেবি কেয়ার সেন্টার ‘আনন্দধারা’-এর স্বত্বাধিকারী নাসমিন আকতার বলেন, মূলত কর্মজীবী মায়েদের কথা মাথায় রেখেই আমার সীমিত পরিসরে এ বেবি কেয়ার সেন্টারটি করা। কর্মজীবী নারীরা চিন্তায় থাকেন নিজের ছোট বাচ্চা নিয়ে। আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আছে বড় করে একটি বেবি কেয়ার সেন্টার প্রতিষ্ঠা করার জন্য। শিশুর ভবিষ্যতের কথা ভেবেই শিশুকে দিবাযতœ কেন্দ্র বা বেবি কেয়ার সেন্টারে দেওয়া উচিত।বেবি কেয়ার সেন্টারে বাচ্চার শুধু দিনযাপনই হয় না, বাচ্চা শেখে আচার-ব্যবহার, কথা বলা, শুদ্ধ উচ্চারণ। কতগুলো বাচ্চা যখন একসঙ্গে এক টেবিলে খেতে বসে, হাসতে-খেলতে কখন খেয়ে ফেলে তা টেরই পায় না। পড়ার বেলায়ও একই ব্যাপার।

বিভিন্ন বয়সী বাচ্চা একজনের দেখাদেখি আরেকজন পড়তে উৎসাহী হয়। সবচেয়ে ভালো হয় বাচ্চাদের নিজেদের মধ্যে লেনদেন ও তারা মিশতে শেখে। আচরণ শেখে, বন্ধুত্ব শেখে, বন্ধুদের সঙ্গে মিলেমিশে রাগে-অভিমানে, ঝগড়া-আপসে বাঁচতে শেখে, যা ঘরের একাকিত্বে সম্ভব না। আর ভবিষ্যত নাগরিকদের জন্য লেখাপড়ার পাশাপাশি এই  শেখাটা খুব জরুরি।

আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ জোবায়ের আহমেদ বলেন, আসলেই এটি একটি ভালো উদ্যোগ। ধন্যবাদ জানায় এ নারীকে। এ উপজেলার মধ্যে বেবি কেয়ার সেন্টার বা শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র একটিও নেই। যদি উপজেলা প্রশাসনের কোনো সহযোগিতা প্রয়োজন হয়, তাহলে সহযোগিতা করা হবে।