আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা তৎপর, বিএনপি নিশ্চুপ

সীতাকুণ্ড পৌরসভা নির্বাচন
নিজস্ব প্রতিনিধি, সীতাকুণ্ড :
নির্বাচন কমিশন যথাসময়ে পৌরসভা ও ইউপি নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়ার পর সীতাকুণ্ড পৌরসভার মাঠ পর্যায়ে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তৎপরতা শুরু হয়েছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তৎপরতা দেখা গেলেও বিএনপি প্রার্থীরা নিশ্চুপ।
আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা তাদের অনুসারী নেতাকর্মীদের নিয়ে ঘরোয়া বৈঠকের পাশাপাশি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে জনসংযোগ চালাতে দেখা যায়। মনোনয়ন প্রত্যাশীরা দলীয় সমর্থন নিশ্চিতের লক্ষ্যে জেলা উপজেলা নেতৃবৃন্দের কাছে গিয়ে মন জোগানোর চেষ্টাও অব্যাহত রেখেছেন। অন্যদিকে বিএনপি এখনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কিনা দ্বন্দ্বে থাকায় প্রার্থীরা এখনো সরাসরি মাঠে নামেননি। তবে দল নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিলে দলের একাধিক প্রার্থী নির্বাচনী প্রস্তুতি নিবেন বলে জানা যায়।
সীতাকুণ্ড পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এক ডজন প্রার্থী মনোনয়ন পাওয়ার আশায় জেলা ও উপজেলা ও তৃণমূল নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন। তাদের মধ্যে বর্তমান মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা বদিউল আলম, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম রব্বানী, কাউন্সিলর মাইমুন উদ্দিন মামুন, জুলফিকার আলী মাসুদ শামীম, সাংবাদিক মো. ইউসুফ, যুবলীগ নেতা শাহ কামাল চৌধুরী, মেজবাউদ্দিন চৌধুরী, সফিউল আলম মুরাদ, জাহেদ চৌধুরী ফারুক, অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ, ইঞ্জিনিয়ার জাহাঙ্গীর আলম ও সামী আল মুজতবা।
বিএনপি থেকে যারা মনোনয়ন চাইতে পারেন তারা হলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল মুনছুর, পৌরসভা বিএনপি সভাপতি ইউছুফ নিজামী, ছাত্রদল নেতা মো. বখতিয়ার ও আলমগীর ইমরান। বিএনপি নেতা জহিরুল আলম জহির নাগরিক কমিটির প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় আছেন ।
আওয়ামী লীগ হতে মনোনয়ন প্রত্যাশী বর্তমান মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা বদিউল আলম বলেন, পৌর সভার মেয়রের দায়িত্ব নেয়ার পর হতে নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী দাতা সংস্থা এমজিএসপি, উন্নয়ন সহায়ক তহবিল এডিপি ও নগর অবকাঠামের উন্নয়ন আইইউআইডিপির অধীনে প্রায় ৩২ কোটি টাকার কাজ শেষ করেছি। এছাড়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে জেলা ও থানা নেতা কর্মীদের সাথে নিয়ে দলীয় সব কর্মকাণ্ড সুচারুভাবে পরিচালনা করেছি। পৌরসভায় এখনো কিছু কিছু প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে এবং কিছু কাজ শেষ হয়নি। অসম্পন্ন কাজ শেষ করা এবং পৌরসভাকে ডিজিটালাইজড করার লক্ষ্যে আগামী নির্বাচনে আবারো মেয়র প্রার্থী। মাঠ পর্যায়ে প্রস্তুতি খুব ভাল, আমি মনে করি দল আমার কর্মের মূল্যায়ন করবে এবং আবারো আমাকে মনোনয়ন দিবে।
উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম রব্বানী বলেন, গতবারও দল থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলাম, এবারো চাইব, দল যাকে দেয় তার পক্ষে কাজ করব। রোটারিয়ান সাংবাদিক মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে পৌর বাসিন্দারা মুক্ত হতে পাচ্ছে না। পৌরসভার উন্নয়নে অবদান রাখতে মেয়র পদে মনোনয়ন চাইব।
উপজেলা অওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল্লাহ আল বাকের ভুঁইয়া বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি বড় রাজনৈতিক দল। এখানে মনোনয়ন প্রত্যাশী বেশী থাকবে এটা স্বাভাবিক। তৃণমূল নেতাকর্মীদের সাথে সম্পৃক্ত নেতা কর্মীদের দল মূল্যায়ন করবে।’
পৌরসভা বিএনপি সভাপতি ইউসুফ নিজামী নির্বাচনের বিষয়ে বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে বিএনপি থেকে একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশী। আমি নিজেও কখনো দলের কাছে কিছু চাইনি। এবার আমি নিজেই প্রার্থী হতে আগ্রহী। দল যাকেই মনোনয়ন দেয়, দলে সিদ্ধান্ত মোতাবেক কাজ করতে হবে। তবে এখনো পর্যন্ত দলীয় কোন সিদ্ধান্ত না আশায় নির্বাচন নিয়ে সবাই নিশ্চুপ রয়েছেন।’
উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালে ১ এপ্রিল ২৮ বর্গমাইল আয়তনের সীতাকুণ্ড পৌরসভা গঠিত হয়। এ পৌরসভায় ভোটার রয়েছেন প্রায় ২৮ হাজার। ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং এতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বর্তমান মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা বদিউল আলম বিএনপি প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল মুনছুরকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন।