‘আইসিইউ-ভেন্টিলেশনের নৈরাজ্যে দুঃখ-ক্ষোভে ফুঁসছে চট্টগ্রাম’

জীবন রক্ষার আইসিইউ-ভেন্টিলেশনের নৈরাজ্যে চট্টগ্রাম দুঃখ-ক্ষোভে ফুঁসছে বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন। তিনি আজ ১০ জুন (বুধবার) এ অভিমত প্রকাশ করেন।
এ সময় সুজন বলেন, করোনা ভাইরাস আমাদের জীবনধারাকে কেড়ে নিয়েছে। প্রতিনিয়ত জীবন মৃত্যুর মাঝখানে অবস্থান করছে মানুষের অমূল্য জীবন। কখন যে কার ঘরে প্রাণঘাতী এ ভাইরাস হানা দেয় তা সবার অজানা। আর এ রকম একটি দুঃসহ পরিস্থিতিতে শ্বাসকষ্টে ভোগা করোনা রোগীকে একটুকু স্বস্তি দিতে পারে আইসিইউ-ভেন্টিলেশন সুবিধা। অথচ এই আইসিইউ-ভেন্টিলেশন সুবিধাই মিলছে না বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের করোনা আক্রান্ত রোগীদের। একদিকে প্রতিদিন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের অমূল্য জীবন ঝড়ে যাচ্ছে এই নগরীতে। অন্যদিকে প্রতিনিয়ত মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করে বাঁচার করুন ব্যাকুলতা আক্রান্ত রোগীদের। মানুষ এখন মৃত্যুকে জয় করে বাঁচতে চায়। কিন্তু কে দিবে তাদের স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি সে প্রশ্ন আজ চট্টগ্রামবাসীর মুখে মুখে। চট্টগ্রামের মানুষের চোখে মুখে আজ উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। আইসিইউ-ভেন্টিলেশন সুবিধা থাকা সত্ত্বেও হাসপাতালগুলো প্রতিদিন রোগী ফেরত দেওয়ার নিষ্ঠুর কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। কোন কিছুতেই তাদের দৌরাত্ম্য থামানো যাচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে, রোগীরা সারাদিন আইসিইউ সুবিধার আশায় হাসপাতালের দ্বারে দ্বারে ঘুরে রাত্রে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ, জেনারেল হাসপাতাল, মা ও শিশু হাসপাতালসহ নগরীর বেসরকারি হাসপাতালসমূহে কয়টি আইসিইউ-ভেন্টিলেশন সুবিধা আছে তা রোগী কিংবা তার আত্মীয় স্বজনদের অজানা। ফলে এই সুবিধা নিয়েও নিষ্ঠুর বাণিজ্য চলছে।
তাই নগরীতে আইসিইউ-ভেন্টিলেশন সুবিধা সম্বলিত কয়টি বেড রয়েছে তার পরিসংখ্যান সরজমিনে পরিদর্শন করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেডিক্যাল কোরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নেতৃত্বে ডাটাবেজ করে কেন্দ্রীয়ভাবে প্রকৃত রোগীর অনুকূলে বরাদ্দ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার সবিনয় অনুরোধ জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্যি যে বায়েজিদ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সগির আহমেদ গতকাল হাসপাতালের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বিনা চিকিৎসায় মারা গিয়েছেন। দলীয় রাজনীতির পাশাপাশি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে একজন পরিচিত মুখ ছিলেন তিনি। ঢাকার রাজপথে নূর হোসেন শহীদ হওয়ার মিছিলেও উপস্থিত ছিলেন তিনি। হাসপাতালগুলো তাকে চিকিৎসাসেবা না দিয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে। আমরা মনে করি এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকা-। তার মৃত্যুর বিষয়ে একজন প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট অথবা বিচারপতির নেতৃত্বে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠনের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন ও দায়ী ব্যক্তিদের কঠোর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জন্য সবিনয় অনুরোধ জানান তিনি।
এছাড়া তার পরিবার এ রকম অমানবিক হত্যাকা-ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে আগ্রহী হলে সর্বাত্মক সহযোগিতারও আশ্বাস দেন সুজন। বিজ্ঞপ্তি